নারীদেরকে মুরগী, তেঁতুল, কলা, চকলেট ভোগ্যপণ্যের সঙ্গে তুলনা করছে। আর সেইসব কদর্য কথাবার্তা শত শত শিক্ষিত নারীরা গিলে খাচ্ছে। আমার ভাবতেই অবাক লাগে, ২০২৩ সালে এসেও এখনো শিক্ষিত নারীরা নিজেদের মুরগী, কলা, তেঁতুল ভাবে। বাঙালি নারীরা যেদিন থেকে নিজের ভ্যাজাইনার চেয়ে নিজের মস্তিষ্ককে বেশি মূল্যায়ন করতে পারবে, সেদিন থেকেই তাদের মুক্তি মিলবে। নাহলে আজীবনই বোকা হয়ে পুরুষের যৌন দাসী হয়ে থাকতে হবে। মূল সমস্যাটি হচ্ছে, বেশির ভাগ বাঙালি নারীরা নিজের সৌন্দর্য চর্চার মতো নিজের মস্তিষ্ককে চর্চা করতে পারে না৷
আঠারো হাজার মাকলুকাতের মধ্যে মানুষ নাকি সৃষ্টির সেরা জীব।তো ইনি নারীদের মুরগি আর পুরুষদের শেয়াল বলেছেন।এটা অবশ্য বিশেষজনদের ইঙ্গিত করেই বয়ান দিয়েছেন। তাই বলেছেন সকল (প্রথাবিরোধী) পুরুষগণ হচ্ছে শেয়াল আর সকল নারীরা মুরগী ওনার কথায় এটাই বোঝায়।উনি তো মানুষদের মানুষই মনে করলো না! ওনাকে কে অধিকার দিয়েছে নারীদের মুরগী আর পুরুষদের শেয়াল বলার? উনি হয়তো নপুংসক ওনার কোনো শারীরিক প্রতিক্রিয়া নেই তাই এমন বক্তব্য দিয়েছেন! উনি শিয়াল হইতে পারেন, কিন্তু আমরা মানুষ তেঁতুল, চকলেট,আইসক্রিম, মুরগী নই। যাই হোক ওনার এই বক্তব্যের তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি। ছবি কালেক্টেড: Joy Deb
সোহাগ ভাই ক্লাসে পড়াচ্ছে, "শিয়াল সবসময় মুরগির স্বাধীনতা চায়। যাতে শিয়াল মুরগিকে ধরে খে'য়ে ফেলতে পারে।" প্রথাবিরোধী ছাত্রী : স্যার, মুরগি শুধু শিয়ালেই নয়, কু'কুরেও খা'য়। সোহাগ ভাই : মানে? প্রথাবিরোধী ছাত্রী : সেইম গল্পটাই আমি দাদির মুখে শুনেছিলাম। তবে আপনি হয়তো শুরুর ও শেষের অংশটুকু বলতে ভুলে গেছেন। যাই হোক, আমি ভুলিনি কাজেই আমিই বলছি। "একটা ঘরে কতগুলো মুরগি বাস করতো। সেই ঘরের পাশ দিয়ে ঘুরে বেড়াতো একটা ধূ'র্ত কুকু'র। তবে মুরগিগুলো কু'কুরের ধূ'র্ততা সম্পর্কে ছিলো নিতান্তই অজ্ঞ। কুকুরটি মুরগিগুলোকে সারাক্ষণই শিয়াল সম্পর্কে সচেতন করতো। শিয়ালে সবসময় মুরগির স্বাধীনতা চায়। যাতে শিয়াল মুরগিকে ধরে খেয়ে ফেলতে পারে। তোমরা কখনো ঘরের বাইরে আসবে না। তাহলেই শিয়ালের খপ্পরে পড়বে। প্রয়োজনে আমি তোমাদের খাবার এনে দিবো। কিন্তু তবুও বাইরের শিয়াল থেকে সাবধান। এসব ভয় দেখিয়ে মুরগিগুলোর বিশ্বাস অর্জন করে। ফলশ্রুতিতে মুরগিগুলোর শিয়াল সম্পর্কে নেতিবাচক ধারণা জন্মালেও কুকুরের প্রতি কোনো সন্দেহ থাকেনা। একটা সময় কুকুরটি খাবার নিয়ে আসার বাহানায় মুরগির ঘরে ঢুকে দরজা বন্ধ করে দিয়ে সবগুলো মুরগিকে খে'য়ে সাবাড় করে দেয়।" আর আপনার ধা'ন্দাটাও অনেটা সেরকম। সোহাগ ভাই : কী সব উল্টোপাল্টা বলছো? প্রথাবিরোধী ছাত্রী : উল্টোপাল্টাটা ঠিক কীসের স্যার? এই যে শিয়ালের ভয় দেখিয়ে আমাদের স্বাধীনভাবে চলতে দিচ্ছেন না, অথচ দিনশেষে আপনারাই আবার ঘরে বন্দী করে কু'কুরের মতো ভো'গ করবেন। একেকজন তিনটা-চারটা করে ভোগ করবেন। যখন যেমন খা'য়েশ জাগবে তখনই তেমন, এমনকি রাস্তায় কোনো নারী দেখলে যখন প'শুত্ব জেগে উঠবে তখনও এসে ঝাঁপিয়ে পড়বেন। যেমনটা করে ভাদ্র মাসের কু'কুরেরা । বাঁধা দেয়ারও কোনো সুযোগ নেই, কেননা কু'রআ'নের বিধান অনুযায়ী "তোমাদের স্ত্রী তোমাদের শস্যক্ষেত্র। অতএব তোমরা তোমাদের শস্যক্ষেত্রে যেভাবে ইচ্ছা গমন করতে পার।" আবার হা'দিসের বিধান অনুযায়ী "কোনো পুরুষ নিজ স্ত্রীকে তার শয্যার দিকে ডাকলে সে যদি তাতে সাড়া না দেয় অতঃপর সে তার উপর রাগান্বিত হয়ে রাত্রি যাপন করে তাহলে ফেরেশতারা তার উপর লা'নত করতে থাকে।" কাজেই ভাদ্র মাসের কু'কুরদের সাথে আপনাদের কোনো পার্থক্যও দেখিনা। সোহাগ ভাই : এই অস'ভ্য মেয়ে, কী আজেবাজে বলছো? ভুলে যেওনা আমি তোমার স্যার। প্রথাবিরোধী ছাত্রী : গায়ে খুব ফোসকা পড়ছে, তাইতো? অবশ্য সেটাতো পড়ারই কথা। কেননা উচিৎ কথা তো আর গায়ে সয় না। আপনি আমার স্যার হলেও আপনি একজন নারীবি'দ্বেষী। আর নারীবিদ্বে'ষীরা কখনোই নারীর স্বাধীনতা চায় না। যারা নারীকে ভোগ ক্রী'তদাস মনে করে, নারীরা যাদের কাছে কেবল ভো'গপণ্য, যাদের লক্ষ্য হলো নারীকে আজীবন পুরুষের দা'সত্ব করানো, তারাই নারীদেরকে শিয়ালের ভয় দেখিয়ে মু'রগি বানিয়ে গৃ'হবন্দী করে রাখে আর পরে কু'কুরের মতো ভো'গ করতে চায়। সোহাগ ভাই : এই অস'ভ্য মেয়ে, তুমি ক্লাস থেকে বের হও। অন্য ছাত্রীরা : কেন স্যার, ও ভুল কী বললো? ওতো ঠিক কথাই বলেছে। প্রথাবিরোধী ছাত্রী : শিয়াল যদি মুরগিকে খা'ওয়ার জন্যও স্বাধীনতা চায়, তবুও শেয়ালের জন্য সেটা অত সহজ নয়, কিছুটা পরিশ্রমের কাজ বটে। কেননা সেখানে মুরগিরও স্বাধীনতা থাকে। কিন্তু আপনাদের কাছে তো আমাদের স্বাধীনতা থাকে না। কাজেই আমাদের ভো'গ করা আপনাদের জন্য তখন অনেক সহজ হবে। তাই না স্যার? সোহাগ ভাই : এই মেয়ে, তুমি কী চুপ করবে? এত বেশি কথা বলো কেন তুমি? প্রথাবিরোধী ছাত্রী : আর বেশি কিছু বলবো না স্যার। শুধু এতটুকুই বলবো যে, "জীবনের সমস্ত দিন ব'ন্দী থাকার চেয়ে স্বাধীনতার জন্য লড়াই করা অনেক ভাল।" সংগৃহীত - আসক্ত