#Audiostoryclassic #ashapurnadevi চৌধুরী কর্তার পরিবারের একজন গৃহবধূ র দীক্ষা গ্রহণ এর দিন টিকে ঘিরে শুরু হয় এক গলযোগ। আর চৌধুরী কর্তার তত্ত্বাবধানে তা কেমন করে অবসান হয় তাই নিয়েই এই গল্প। thumbnail - @poeticlife_sarbojit
@@Audiostoryclassic2597 ঠিক বলেছেন। আমি জীবনভর আমার স্বর্গীয়া ঠাকুমার আদর্শে চলি। তিনি বলতেন," ঠাকুরের কী রূপ , তিনি জানেন না। হইতে পারে, তিনি দূর্গা বা তিনি কালী বা তিনিই দেবাদীদেব মহাদেব।কিংবা দেবী লক্ষী, সরস্বতী যে কেউ হইতে পারেন। এমন কি তিনি মুসলমানের আল্লা অথবা খ্রীষ্টানের মিশু খ্রীষ্ট ও হইতে পারেন। আমি অতশত জানি না। আমি শুধু জানি আমাগো পাপ পুন্যের বিচার করনের লইগ্যা আমাগো মাথার উপরে একজন ব ইস্যা আসেন্ ।তিনি ই আমাগো বিশ্বাস,তিনি ই আমাগো অবলম্বন। আর ঐ বিশ্বাস আর অবলম্বন ই হইলেন আমাগো ঈশ্বর বা ভগবান। " আমার ও সেই একই মত। আমিও ঠাকুমার মতোই কোনো গুরুদেব, মহারাজ শ্রেণীকে অন্তর থেকে বিশ্বাস করি না। শ্রদ্ধা - ভক্তি তো এতটুকুও আসে না। আমার ঠাকুমা অন্যের পিড়াপিড়িতে এক জ্যোতিষির কাছে হাত দেখাতে যেতে বাধ্য হয়েছিলেন। কিন্তু গিয়েই তিনি সেই জ্যোতিষিকে প্রশ্ন করেছিলেন, " আগে আপনি আমার জন্ম থিইক্যা আজ এই ক্ষণ পর্য্যন্ত অতীত খান্ কন্ দেখি। দেখি সম্পূর্ণ মিইল্যা যায় কী না। যদি মিইল্যা যায়, তখন না হয় আপনি আমার ভবিষ্যৎ কইবেন খন। " শুনে সেদিনকার মতো হাত দেখা পর্ব গুটিয়ে নিয়েছিলেন অসুস্থ্যতার অজুহাত দিয়ে সেই গুরুদেব মহাশয়। পরবর্তীতে লোক ঠকানোর অপরাধে যার স্থান হয় বিরভূম জেলার কোন এক কারাগারে। এখনো বেঁচে আছেন কিনা জানি না। সুতরাং আমিও কাউকে কখনো হাত দেখিয়ে ভাগ্য জানতে যাই না। আর দুহাতে ১০ টা পাথরের আংটি ও পরে থাকি না। কিন্তু, ঘটনাচক্রে, আমি কিন্তু দীক্ষিত। কালী মন্ত্রে।আমার শ্বশুর বাড়িতে দক্ষিণা কালী মায়ের পূজো হয়, কালী পূজোর দিনে আর তার পরের দুটো দিনেও। বাচ্চা থেকে বুড়ো সবাইকেই দীক্ষা নিতে হয়, পূজোর কাজে অংশ নেওয়ার জন্য। আমরা তো ভোগ রান্না করি। তাই বিয়ের ৩/ ৪ দিন বাদেই আমাকে দীক্ষা নিতে পাঠানো হয় কুল গুরুর আশ্রমে। কিন্তু আমি একদম প্রস্তুত ছিলাম না মানসিক ভাবে এ ব্যাপারে। তবু আমি গল্পের নাত বৌ এর মতো সাহসী হয়ে আপত্তি জানাতে পারি নি সেদিন। কিন্তু দীক্ষা নেওয়ার পরেও আজ ও এতটুকুনিও স্থীরতা আসে নি আমার মনে। কোনো আধ্যাত্মিক ভাব ই নেই আমার মধ্যে। প্রথম প্রথম চেষ্টা করেছিলাম জপ তপ করতে। কিন্তু জপ করার সময় চোখের সামনে সবজি পাতি, মাছ, মাংস-- কোনটা কখন রান্না করে খেতে দেব -- সেটাই ফুটে উঠতে লাগলো। মা দক্ষিণা কালীর মুখের বদলে। তাই ছেড়ে দিয়েছি এই জপের নামে ভন্ডামী করা।মন্ত্র তন্ত্র কিছুই জানি না, তাই গান গেয়ে ঠাকুরকে মনের ভক্তি নিবেদন করি। এটাই আমার পূজো। শুধু আমি কুকুর অসম্ভব ভয় পাই। আর রাস্তায় বেরিয়ে কুকুর দেখলেই, নিজের অজান্তেই আমার মুখ দিয়ে দীক্ষা মন্ত্র বেরিয়ে আসে। আজ অবধি কোন কুকুর আমাকে কামরায় ও নি। তাই কেমন যেন একটা বিশ্বাস হয়ে গেছে ( ' বিশ্বাস ' ) আমি যখন ই কোনো বিপদে পড়বো,মা দক্ষিণা কালী এসে আমাকে ঠিক বাঁচিয়ে দেবেন। আবার আমি যদি কোনো ভুল কাজ করেও ফেলি, তাহলেও ঐ মা দক্ষিণা কালী ই আছেন একমাত্র, যিনি আমার সব যুক্তি শুনবেন, কেন আমি ভুল কাজ টা কোন্ পরিস্থিতি তে পড়ে করেছি। আর কেউ শুনবে না। তিনি শুনবেন কারণ তিনি ই যে আমার বেঁচে থাকার ' অবলম্বন'। আশাপূর্ণা দেবীর চৌধুরী কর্তা আর তার নাত বৌ ও বোধ হয় আমাদের ঠাকুমা - নাতনির মতো করেই ভাবতেন। কুকুরের ভয় থেকে শুধু নয়, এটা তো একটা উদাহরণ মাত্র, সঙ্কটে পড়লেই আমার দীক্ষা মন্ত্র ই আমাকে শক্তি যোগায় সঙ্কট থেকে বেরিয়ে আসতে।
প্রথমেই জানাই অনেক ভালোবাসা এত সুন্দর অভিজ্ঞতা ভাগ করে নেওয়ার জন্য। না,এভাবে জোর করে দীক্ষা নেওয়া টা সুন্দর অভিজ্ঞতা নয় অবশ্যই।কিন্তু এমন একজন ঠাকুমার সান্নিধ্য প্রাপ্তি অবশ্যই সুন্দর অভিজ্ঞতা। এবারে দ্বিতীয় স্থানে যেটা না বললেই নয় আপনার ঠাকুমা সেই যুগের হয়েও মানসিক ভাবে প্রকৃত আধুনিকা। আপনার ঠাকুমা কে অসংখ্য সম্মান এবং প্রণাম। আমি বিশ্বাস করি কম কাপড়ের পোশাক পরলেই আধুনিক হওয়া যায়না।আধুনিক মানসিকতায় হয়।আপনার ঠাকুমা তার প্রমাণ।আপনার ঠাকুমার সাথে আমি সমস্ত জায়গায় একমত এবার বলি ভাগ্যক্রমে আমিও মা কালীর ভক্ত। ''তারা মা''। আমার বাড়িতেও তিনিই পূজ্য।ছোট থেকে পর্যন্ত আমি যখনই যে কোনো বিপদে পড়েছি তাকে স্মরণ করেই বেঁচেছি।বিশ্বাস করি তিনিই রক্ষা করেন। তবে দীক্ষা কখনো নিইনি। আমার মা বলে ভগবান কে ডাকার জন্যে মন কে পরিস্কার রাখতে হয় যা চাইছি তা সৎ হতে হয় তিনি তাতেই সাড়া দেন। প্রসাদ দিতে হলে মানুষের সেবা কর যতটা পারো পাশে থাকো সেটাই ভগবান সেবা। আর গুরু যদি কাউকে মানতেই হয় তা মা বাবা আর বিয়ের পর শশুর শাশুড়ি। আমি সেটাই বিশ্বাস করি আর মেনে চলি। এখনো বিয়ে হয়নি বিয়ের পর যদি আমাকেও এমন পরিস্থিতিতে পড়তে হয় হয়ত সাহস টা আমিও দেখাতে পারব না।তবে মন থেকে আজও যা মানি তাই মানব