গনতান্ত্রিক দেশে ব্যক্তিগত ধর্মীয় রীতিনীতি পালনের অধিকার আমাদের বাবাসাহেব অম্বেদকরের সংবিধান থেকে দেওয়া হয়েছে। আমরা এমন দেশে বসবাস করি একজন শিখ তার বেনী পাগরী ধারন করতে পারেন, একজন সন্যাসী জনপ্রতিনিধি হতে পারেন। এ আমাদের মৌলিক অধিকারের মধ্যে পড়ে।
কিন্তু দূর্ভাগ্যের বিষয় হল রঘুনাথগঞ্জ বালিকা বিদ্যালয়ের ক্লাস ৮ এর ছাত্রী অনু মন্ডল। একজন তপসিলি পরিবারের ছাত্রী যারা পারিবারিক ভাবে চৈতন্য মহাপ্রভুর অনুসারী। যে চৈতন্য মহাপ্রভু বাংলায় নবজাগরণের প্রানপুরুষ যিনি মিলিয়ে দিয়েছিলে জাতিধর্মবর্নের ভেদাভেদকে। বাংলাকে পথ দেখিয়েছিলেন আত্মিক উন্নতির।
অনু মন্ডলের অপরাধ সে চৈতন্য মহাপ্রভুর অনুসারী। নির্ধারিত স্কুল ইউনিফর্ম এর সাথে কপালে থাকে উর্দ্ধপুন্ড্র তিলক, গলায় তুলসীমালা। শুধু মাত্র এই কারনে নিয়মিত তাকে মানসিক নিপিড়ন ও সকল ছাত্রী সামনে অপমান করে চলেছেন তারই শিক্ষিকা ভাস্বতী পন্ডিত। এই নিয়ে ছাত্রীর পিতা সেই স্কুলে অভিযোগ জানালে প্রধান শিক্ষিকা বলেন ব্যাপারটা আমরা দেখব।সে সময় গোলাম মাসুদ যিনি বিদ্যালয় করনীক তিনি ছাত্রীর বাবাকে অপমান করার চেষ্টা করেন কিন্তু এখানেই সব শেষ নয় গতকাল পুনরায় কোধান্বিত হয়ে সেই শিক্ষিকা পুনরায় অনুমন্ডলকে সকলের সামনে তার তিলক,মালা নিয়ে মন্তব্য করতে থাকেন। সে বৈষ্ণব হওয়ার কারনে সাত্ত্বিক ভোজন (কৃষ্ণপ্রসাদ) ভিন্ন কিছু আহার গ্রহন করে না। সেখানে তাকে নিয়মিত মিড ডে মিলের খাবার না খাওয়ার জন্যও কথা শোনানো হয়। এ কোন দেশে বাস করছি আমরা!
ঘটনার প্রতিবাদ দেখা গেল আজ
চৈতন্য মহাপ্রভুর পদাঙ্ক অনুসরন করেই সংকীর্তন আন্দোলন এর মধ্যে দিয়ে শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ করতে হল গৌড়ীয় বৈষ্ণবদের। এ বড়ই লজ্জার বিষয় এক স্বাধীন দেশের সরকারি প্রতিষ্ঠানের এই চিত্র হলে সমাজের সামগ্রিক চিত্রটা কি সহজেই অনুমেয়।
অনু মন্ডলের সাহস ও শিরদাঁড়ার প্রশংসা না করলেই নয় যে এত মানসিক চাপ সহ্য করেও তার সংস্কৃতিকে আঁকড়ে ধরে থেকেছে। কিন্তু আমরা? এই অপমান কি একা অনুমন্ডলের! নাকি সমস্ত শুভবুদ্ধিসম্পন্ন ভারতীয় কৃষ্টিপ্রেমী মানুষদের! ভাবুন...
13 июн 2024