এ মন আজি কেন এতো চঞ্চল?
কিছুদিন আগে এক বড় ভাইয়ের বিয়ে উপলক্ষে হাওর অঞ্চলে ঘোরাঘুরি করার সুযোগ হয়েছিলো। হাওর অঞ্চল বরাবরই আমাকে টানে। এইসব অঞ্চলের সাথে আমার অনেক স্মৃতি জড়িয়ে রয়েছে। এখনো হাওর দেখলেই আমার মাথায় পুরনো গল্পেরা ঘুরপাক খায়।
ছোটবেলা আমার মাসির বাড়ির সূত্রে প্রায়ই হাওর অঞ্চলে যাওয়া হতো। তখন আমাদের এলাকা হতে কিছুটা দূরে যতটুকো পর্যন্ত হাওরের পানি আসতো, সেখান থেকে নৌকা করে আমরা মাসির বাড়ি যেতাম। নৌকা'র ছাদে বসে যাওয়ার জন্য যদিও পাগল ছিলাম, তাও ভাগ্যে জুটতো নৌকার ভিতরে মায়ের পাশে বসে বসে যাওয়া। যাত্রাপথে বিস্তীর্ণ হাওরের বিশালতা আমাকে মুগ্ধ করতো, বিশাল হাওরের মধ্যে দেখতে পেতাম ছোট্ট ছোট্ট পালতুলা নৌকা! এমন নৌকায় বসে মাছ ধরা দেখার শখ টা সেই ছোটবেলা থেকে এখনও পর্যন্ত রয়ে গেছে। কিন্তু কখনো সেই সৌভাগ্য হয়ে উঠে নি! আকাশের সাথে মিশে যাওয়া দূরত্বে ছোট্ট ছোট্ট নৌকা আর নৌকার মাঝি, মাঝেমধ্যে একেকটা নৌকায় আমার বয়সী কোনো ছেলেকেও দেখতে পেতাম! "ওরা কোথায় যাবে? ওদের বাড়িতে যদি আমরা এখন যেতে পারতাম!" নৌকার ভেতর মায়ের পাশে বসে বসে আমার কৌতুহলী মস্তিষ্ক শুধু এসবই ভাবতো। আর মনে মনেই গুণগুণ সুরে যা খুশী গান জুড়ে দিতো। এসব ভাবতে ভাবতে বিকেলের শেষে সন্ধ্যা ঘনিয়ে আসার আগ মূহুর্তে আমরা মাসির বাড়ির কাছাকাছি পৌছে যেতাম। চক-বাজার নামক স্থানের টিনের ঘর আর কিছুটা দিনের আলো থাকা অবস্থায়ও মিটমিট করে জ্বলতে থাকা হলুদ বাতিগুলো দেখলেই মনটা কেমন যেনো চঞ্চল হয়ে উঠতো! এইতো এসে গেছি! আর বেশি সময় নেই। আস্তে আস্তে জুতা-জোড়া পায়ে লাগিয়ে নিতাম, মনে মনে প্রস্তুতি নিয়ে রাখতাম নৌকা থেকে নামার...
এখনও সেই দিনগুলোর কথা মনে হলে আগের মতোই লাগে, মনটাও আগের মতোই চঞ্চল হয়ে উঠে! কিন্তু এখন মন চাইলেই হাওরে যাওয়া যায় না। বড়জোর মোবাইলে লগ্নজিতা'র এই গানটাই চালিয়ে দেওয়া যায়,
' এ মন আজি কেন এতো চঞ্চল?'
#arkoemoncinematography #haworareas #cinematography #cinematicvideo #beautifulbangladesh
1 окт 2024