কালান্দার ড. বাবা জাহাঙ্গীর বা-ঈমান সুরেশ্বরী। ফকিরনি দরবার শরীফ, ঢাকা কেরানীগঞ্জ। 

🔺সকলকে লিখাটি পড়ার জন্য বিশেষভাবে অনুরোধ করা হলো🙏
#বায়তুল মোকাদ্দাস মসজিদ নির্মাণের রহস্যভিত্তিক আলোচনা-(পর্ব-০১)
সূরা সোয়াদের সাঁইত্রিশ নম্বর আয়াতটি গবেষণা করতে গেলে কত প্রকার যে গোপন ভেদ রহস্য লুকিয়ে আছে তা পরিষ্কাররূপে ধরা পড়তে শুরু করে। নবী দাউদ ও তাঁর পুত্র নবী সোলায়মান বায়তুল মোকাদ্দাস তৈরী করার সময় বেশ কিছু জ্বিন নামক কর্মীদের দ্বারা কাজ করিয়ে নিয়েছেন তার দলিল কোরানের এই আয়াতে পরিষ্কার বুঝা যায়। সেই সকল জ্বিনেরা কি কি কাজ করতো এবং তারা যে এক একটি বিশেষ কাজ করতো তার কথাও জানতে পারি। যেমন রাজমিস্ত্রির কাজ করতো বেশ কিছু জ্বিন এবং বেশ কিছু জ্বিন ডুবুরীর কাজ করতো। কিন্তু মজার কথাটি হলো, কোরানে জ্বিন শব্দটি ব্যবহার না করে শয়তানেরা শব্দটি আছে। শয়তান জ্বিন জাতিরই একজন। কিন্তু এখানে শয়তানেরা নামক বহুবচন শব্দটি ব্যবহার করা হয়েছে। তাহলে তো এত বড় এতো সুন্দর বায়তুল মোকাদ্দাসের মতো পবিত্র ঘরটি বানাতে গিয়ে শয়তান নামক জ্বিনদের সাহায্য এবং সহযোগিতা নেবার কথাটি ঘোষণা করা হয়েছে। তাহলে গবেষণা করলে দেখা যায় যে, দুই নবীর দ্বারা নির্মিত বায়তুল মোকাদ্দাসের মতো পবিত্র ঘরটিও শয়তানদের সাহায্য নিয়েছেন। তাহলে শয়তানদের সাহায্য সহযোগিতা যদি ইমারতের সভ্যতা, বিজ্ঞানের সভ্যতা, চিকিৎসা বিজ্ঞানের সহযোগিতা এবং এরকম বহু বিষয়ে সাহায্য সহযোগিতা নেওয়া কি দূষণীয় বলে মনে করেন? যদি বলেন হ্যাঁ, আমার বলার কিছু নেই। আর যদি বলেন না, তাতেও বলার কিছু থাকে না। কারণ জন্মচক্রে বাধানো তকদিরে যা পূর্বেই লিখিত হয়ে আছে তা আপনাকে অবশ্যই বলতে হবে। এভাবে বহু মত ও বহু পথের জন্ম হয় এবং হবেই। বহু মত ও পথ না থাকলে তৌহিদের রূপটির জন্য কাঁদতে হয়না এবং হতোও না। মানব সভ্যতাকে ধাপে ধাপে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে বিজ্ঞান এবং বিজ্ঞান অনেক বিষয়ে এতো দূর এগিয়ে যাচ্ছে যে মানুষ চমকের পর চমক খেয়ে চলছে।
এখানেও আর একটি কথা এসে পড়ে। সেটি হলো এই বিজ্ঞানভিত্তিক সভ্যতার সহায়ক কি শয়তানেরা,না উলিল আলবাবেরা,নাকি উলিল আবসারেরা? কোরান কিন্তু বহুবার উলিল আলবাবদের কথা বলেছে এভাবে যে, জ্ঞানীদের বুঝবার জন্য বহু নিদর্শন আছে। আবার প্রশ্ন আসে যে, এই জ্ঞানীদের জন্য নিদর্শনসমূহ বুঝবার জন্য রাখা হয়েছে বলার পরও এই সমস্ত জ্ঞানীদের জন্য কি কি পুরস্কার রাখা হয়েছে সে বিষয়টির বেলায় কোরান একদম নিরব।
কোরানের ঘোষণা “আমরা তোমাদের সাহারগের নিকটেই আছি” এ তো সবার জন্য। পৃথিবীর সব মানুষের সংগেই আল্লাহ আছেন বলা হলো কোরানে। কোন বিশেষ সম্প্রদায়কে উল্লেখ করে তো কোরান এরকম কথা ঘোষণা করেনি। যদি তাই বলা হতো তাহলে ধরে নিতাম যে কেবল মুসলমানদের সাহারগের কাছেই আল্লাহ আছেন। কিন্তু কোরান এখানে কোন জাতি ধর্ম গোষ্ঠীকে লক্ষ্য করে বলেনি। বরং পৃথিবীর যত মানুষ আছে সবার সংগেই তিনি আছেন এবং তাও আবার অতি নিকটে, অতি কাছে তথা সাহারগের নিকটে। নাস (মানুষ) আমানু (ঈমান এনেছে) এবং মুমিনের (যিনি আল্লাহর খাস বান্দা) পার্থক্যটা না বুঝতে পারলেই সবকিছু এলোমেলো হয়ে পড়ে এবং বিভ্রান্তির জটাজালে সবকিছু পেঁচিয়ে পড়ে।
(চলবে....)
গ্রন্থ: সুফিবাদ আত্মপরিচয়ের একমাত্র পথ-১ম খন্ড
লেখক: ডা. বাবা জাহাঙ্গীর বা-ঈমান আল সুরেশ্বরী।
Creadit by ‪@user-xp7em4ke3x‬