জন্মভূমি আজ - বীরেন্দ্র চট্টোপাধ্যায় স্মৃতির শহর সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় বোধন সুকান্ত শপথ সলিল চৌধুরী একবার মাটির দিকে তাকাও একবার মানুষের দিকে। এখনো রাত শেষ হয় নি; অন্ধকার এখনো তোমার বুকের ওপর কঠিণ পাথরের মত, তুমি নি:শ্বাস নিতে পারছ না। মাথার ওপর একটা ভয়ঙ্কর কালো আকাশ এখনো বাঘের মত থাবা উঁচিয়ে বসে আছে। তুমি যেভাবে পারো এই পাথরটাকে সরিয়ে দাও আর আকাশের ভয়ঙ্করকে শান্ত গলায় এই কথাটা জানিয়ে দাও তুমি ভয় পাও নি। মাটি তো আগুনের মত হবেই যদি তুমি ফসল ফলাতে না জানো যদি তুমি বৃষ্টি আনার মন্ত্র ভুলে যাও তোমার স্বদেশ তাহলে মরুভূমি। যে মানুষ গান গাইতে জানে না যখন প্রলয় আসে, সে বোবা ও অন্ধ হয়ে যায়। তুমি মাটির দিকে তাকাও, সে প্রতীক্ষা করছে, তুমি মানুষের হাত ধরো, সে কিছু বলতে চায়-- একদিন কেউ এসে বলবে তোমার বসবার ঘরে একটা চৌকি পাতবার জায়গা আছে আমি ঐখানে আমার খাটিয়া এনে শোবো আমার গাছতলা আর ভাল্লাগে না। একদিন কেউ এসে বলবে তোমার ভাতের থালা থেকে আমি তিন গ্রাস তুলে নেবো কারণ আমার কোনো থালাই নেই আমার অনাহার একঘেয়েমির মতন ধিকধিক করে জ্বলছে আর আমার ভাল্লাগে না। গাড়ি বারান্দার তলা থেকে ধুলো মাখা তিনটে বাচ্চা ছুটে এসে বলবে ওগো, আমরা বাসি রুটি চাই না, পাঁচ নয়া চাই না আমাদের ছাই রঙের হাফ প্যান্ট আর সাদা শার্ট পরিয়ে চুল আঁচড়ে দাও আমাদের গাল টিপে দিয়ে বলল, সাবধানে- আমরাও ইস্কুলে যাবো! একদিন কয়লাখনির অন্ধকার থেকে উঠে আসবে একজন কালো রঙের মানুষ সে অবাক হয়ে বলবে একি, আমার জন্য শোকসভা নেই কেন? ডিনামাইট নিয়ে আমি গিয়েছিলুম গভীর থেকে আরও গভীরে আমি ফিরিনি, কিন্তু তোমাদের জন্য আগুন এসেছে আমার নামে তোমরা কেন নাম রাখো নি শহরের রাস্তার তবে এসব রাস্তা কাদের নামে, তাদের তো চিনি না। একদিন ধান খেতে কাদা জল মেখে দাঁড়ানো একজন মানুষ নিজের চেয়ে আরও অনেক লম্বা হয়ে উঠে গলা তুলে বলবে, তোমরা যারা কোনোদিন কাদা জল মাখো নি, মাটিতে শোনন নি কোনো আওয়াজ জানো না ঘাম রক্ত-উৎকণ্ঠায় সবুজ হয় সোনালি সেই তোমরাই শস্য নিয়ে রাহাজানি করো আর আমার সন্তানরা থাকে উপবাসী, তোমাদের লজ্জা করে না? আমি আসছি… আজ আর বিমূঢ় আস্ফালন নয়, দিগন্তে প্রত্যাসন্ন সর্বনাশের ঝড়; আজকের নৈঃশব্দ হোক যুদ্ধারম্ভের স্বীকৃতি। দুহাতে বাজাও প্রতিশোদের উন্মত্ত দামামা, প্রার্থনা করোঃ হে জীবন, যে যুগ-সন্ধিকালের চেতনা- আজকে শক্তি দাও, যুগ যুগ বাঞ্ছিত দুর্দমনীয় শক্তি, প্রাণে আর মনে দাও শীতের শেষের তুষার-গলানো উত্তাপ। টুকরে টুকরো ক'রে ছেঁড়ো তোমার অন্যায় আর ভীরুতার কলঙ্কিত কাহিনী। শোষক আর শাসকের নিষ্ঠুর একতার বিরুদ্ধে একত্রিত হোক আমাদের সংহতি। তা যদি না হয় মাথার উপরে ভয়ঙ্কর বিপদ নামুক, ঝড়ে বন্যায় ভাঙুক ঘর; তা যদি না হয়, বুঝবো তুমি মানুষ নও- গোপনে গোপনে দেশদ্রোহীর পতাকা বও। ভারতবর্ষ মাটি দেয়নিকো, দেয় নি জল দেয় নি তোমার মুখেতে অন্ন, বাহুতে বল পূর্বপুরুষ অনুপস্থিত রক্তে, তাই ভারতবর্ষে আজকে তোমার নেইকো ঠাঁই।। তাই গ্রাম নগর মাঠ পাথার বন্দরে তৈরী হও কার ঘরে জ্বলেনি দীপ চির আঁধার তৈরী হও কার বাছার জোটেনি দুধ শুকনো মুখ তৈরী হও ঘরে ঘরে ডাক পাঠাই তৈরী হও জোটবাঁধো মাঠে কিষান কলে মজুর নওজোয়ান জোট বাঁধো এই মিছিল এই মিছিল সবহারার সবপাওয়ার এই মিছিল প্রতিভা আর যশোদা মার রক্তবীজ এই মিছিল স্বামীহারা অনাথিনীর চোখের জল এই মিছিল শিশুহারা মাতাপিতার অভিশাপের এই মিছিল এই মিছিল সবহারার সবপাওয়ার এই মিছিল হও সামিল।
অসাধারণ দাদা 👏👏 যদি অনুমতি দেন তাহলে আমি এটা নিতে পারি মানে পারফর্ম করতে চাই 🙏 অবশ্যই আপনার নাম উল্লেখ থাকবে। আর একটা কথা, আপনি বললেন সুকান্তের 'প্রিয়তমাসু'র কিছু অংশ... কিন্তু ওটা তো 'বোধন' এর অংশ।
@@suvragupta4635 ধন্যবাদ। কবিতা গুলো তো সবই আমার আছে। কিন্তু কোলাজ টা তো ওনার বানানো। অনেকেই তো নিজের বানানো কোলাজ অন্য কাউকে দিতে চান না। তাই অনুমতি চাইছিলাম।