বাংলাদেশের মসজিদ নিয়ে পৃথিবীজুড়ে তোলপাড় । টাঙ্গাইলের ২০১ গম্বুজ মসজিদ । 201 Gombuj Masjid Tangail latest update
১৫ বিঘা জায়গার উপর এই মসজিদের নকশা করা হয়েছে ২০১টি গম্বুজ ও ৯টি মিনার দিয়ে। দৃষ্টিনন্দন এই মসজিদের ছাদে ১০১ ফুট উচ্চতার একটি গম্বুজ রয়েছে। চারপাশে ছোট ছোট গম্বুজ আছে ২০০টি এগুলোর প্রত্যেকটির উচ্চতা ২৩ ফুট।
আপনাদের সামনে উপস্থাপন করতে যাচ্ছি বিশ্বের সবচেয়ে বেশি গম্বুজের মসজিদ, দিল্লির কুতুব মিনারকে ছাড়িয়ে যাওয়া বিশ্বের ২য় সর্ববৃহৎ মিনারসহ নির্মাণাধীন বাংলাদেশের নান্দনিক ইসলামিক স্থাপনা ২০১ গম্বুজ মসজিদ নির্মাণের ইতিহাস ও মসজিদের আরো নানা খুঁটিনাটি বিষয়, মসজিদটি এতটাই কারুকার্য সমৃদ্ধ ও মনোমুগ্ধকর সেটা বাস্তবে না দেখে শুধু ভিডিও হয়তো আন্দাজ করতে পারবেন না ।
১৯৫৫ সালে বর্তমান টাঙ্গাইল জেলার গোপালপুর উপজেলাধীন দক্ষিণ পাথালিয়া গ্রামের মেছের আলী ও রিজিয়া খাতুনের বড় ছেলে মোঃ রফিকুল ইসলাম, ১৯৭১ বঙ্গবন্ধুর আহবানে সাড়া দিয়ে দীর্ঘ ৯মাস যুদ্ধের পর দেশকে শত্রু মুক্ত ঘরে ফেরেন। বাস্তব জিবনে অত্যন্ত সাদা মনের মানুষ জীবনের বেশীরভাগ সময় ব্যয় করেছেন দেশ গড়ার কাজে, টানা ৪৩বৎসরের বেশি সময় জনতা ব্যাংকের সিবিএ সভাপতি হিসাবে দায়িত্ব পালন করছেন, সর্বশেষ অবদান মুসলিম বিশ্বে বাংলাদেশের মাথা উঁচু করে দেওয়া অত্যন্ত মনোমুগ্ধকর নির্মাণাধীন আল্লাহ্র ঘর ২০১ গম্বুজ বিশিষ্ট মসজিদ । দক্ষিন পাথালিয়া গ্রামের মসজিদটিতে মুসুল্লি ধারন ক্ষমতা কমে যাওয়ায় গ্রামের মানুষের অনুরোধে নতুন মসজিদ নির্মাণ করার উদ্যোগ নেন বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ রফিকুল ইসলাম । ঝিনাই নদীর তীর ঘেঁষে গ্রামীণ মনোরম পরিবেশে নতুন মসজিদ নির্মাণের জন্য গ্রামবাসী জমি দান করতে সম্মত হয়, নিজেও তার পৈতৃক সম্পত্তি দান করেন। কল্যাণ ট্রাষ্ট গঠন করে অর্থ সংগ্রহের মাধ্যমে ২০১ গম্বুজ বিশিষ্ট মসজিদ ও ৪৫১ ফুট (৫৭তলা) সমপরিমাণের মিনার নির্মাণের পরিকল্পনা করা হয় । মসজিদ নির্মাণের লক্ষ্যে নিজের জমানো ১৫লক্ষ টাকা নিয়েই শুরু করা হয় মসজিদ নির্মাণের কাজ , গঠন করেন বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ রফিকুল ইসলাম কল্যাণ ট্রাষ্ট । ২০১৩ সালের ১৩ই জানুয়ারি মসজিদের ভিত্তিপ্রস্থর স্থাপন করেন রিজিয়া খাতুন।
শুরুতে বেশকিছু পরিকল্পনা নিয়ে মসজিদটি নির্মাণ শুরু করা হলেও এতোটা নান্দনিক করার চিন্তা ছিলো না, প্রথমে প্রতিটি গম্বুজের উপরে কাচ ও কড়ি ও পিতলের আংটা লাগানোর পরিকল্পনা করা হয় ।
কিন্তু এই মসজিদ নির্মাণের খবর ও পরিকল্পনা বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়ে গেলে সারাদেশের অসংখ্য মানুষের মাঝে এই মসজিদ নিয়ে আগ্রহ সৃষ্টি হয় । গোপনে বা প্রকাশ্যে দানবাক্সে মানুষ দান করতে থাকে । বিভিন্ন সময়ে পরিদর্শনে আসা দেশের শীর্ষ ব্যবসায়ী ও দানবীরের পরামর্শে মসজিদটি নান্দনিক কারুকার্য করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয় ।
অত্যন্ত দৃষ্টিনন্দন এই মসজিদের ছাদে ৮১ ফুট উচ্চতার একটি গম্বুজ রয়েছে। এই বড় গম্বুজের চারপাশে ছোট ছোট গম্বুজ আছে ২০০টি এদের প্রত্যেকের উচ্চতা ১৭ ফুট। মূল মসজিদের চার কোণায় রয়েছে ৪টি মিনার। এদের প্রত্যেকের উচ্চতা ১০১ ফুট। পাশাপশি আরও চারটি মিনার আছে ৮১ ফুট উচ্চতার। সবচেয়ে উঁচু মিনারটি মসজিদের পাশেই অবস্থিত। এর উচ্চতা ৪৫১ ফুট। ১৪৪ ফুট দৈর্ঘ্য ও ১৪৪ ফুট প্রস্থের দ্বিতল এই মসজিদে একসঙ্গে প্রায় ১৫ হাজার মুসল্লি নামাজ আদায় করতে পারবেন।[
প্রতিদিন সারাদেশ থেকে আল্লাহ্র ঘর এই মসজিদের সৌন্দর্য উপভোগ করতে ও নির্মাণ কাজ দেখতে প্রতিদিন হাজার হাজার দর্শনার্থীর আগমন ঘটে থাকে । সারাদেশের বিভিন্ন পেশার মানুষের অনুদানের মাধ্যমেই মুলত ২০১ গম্বুজ মসজিদের নির্মাণ কাজ এগিয়ে চলেছে , ১৫ বিঘা জমির ওপর নির্মিত মসজিদে বিদেশ থেকে আমদানি করা অত্যাধুনিক মার্বেল পাথর ও টাইলস দিয়ে ইতিমধ্যে মসজিদের গম্বুজ ও ভেতর বাইরে দৃষ্টিনন্দন কারুকার্য করা হয়েছে, মসজিদের গেটে স্থাপন করা হয়েছে ইলেকট্রিক সুইস সমৃদ্ধ বিশাল পিতলের দরজা , প্রবেশ পথে সংযুক্ত করা হয়েছে আল্লাহ্র পবিত্র ৯৯টি নাম , মসজিদের চারিদিকে লাগানো হয়েছে পিতলে খোদাইকৃত পুরনাংগ ৩০ পারা কোরআন শরীফ , আজান প্রচারের জন্য ৪৫১ফুট মিনারের পাইলিং ইতিমধ্যে চলছে, এই মিনারেও থাকবে অত্যাধুনিক কারুকার্য ও উপরে উঠার জন্য দ্রুততম লিফটের ব্যবস্থা । মসজিদের পাশেই চালু করা হয়েছে সুসজ্জিত ওজুখানা ,মসজিদের ফ্লোর থাকবে শিততাপ নিয়ন্ত্রিত, মসজিদের নিচতলায় রাখা হয়েছে মহিলাদের নামাজের ব্যবস্থা, চলছে অত্যাধুনিক লাইটিং লাগানোর কাজ, পুরো মসজিদ এরিয়া থাকবে সিসি ক্যামেরা দ্বারা নিয়ন্ত্রিত , অনলাইনে পাওয়া যায় মসজিদ নির্মাণের সর্বশেষ আপডেট, এজন্য ২০১ গম্বুজ মসজিদ লিখে সার্চ করতে হবে। মসজিদে রয়েছে অত্যাধুনিক সাউন্ড সিস্টেম ।
মসজিদের পাশেই নির্মাণ করা হয়েছে ৫তলা ভবন, এক কথায় নিজের বাসস্থানের চাইতে অধিকরুপে আল্লাহ্র পবিত্র ঘরের সৌন্দর্য ফুটিয়ে তোলা হয়েছে এখানে, মসজিদটি দেখলে আপনার বারবার মনে হতে পারে আল্লাহ্র সৃষ্ট জান্নাতের সৌন্দর্য এর চাইতে আরো কত বেশি সুন্দর হতে পারে ।
মসজিদের জন্য আমদানি করা টাইলস ও ইলেকট্রিক সামগ্রীর জন্য ইতিমধ্যে বাংলাদেশ সরকার ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ড আমদানি শুল্ক মওকুফ করেছেন ।
২০১ গম্বুজ মসজিদের প্রতিষ্ঠাতা বীর মুক্তিযোদ্ধা রফিকুল ইসলাম বলেনঃ এখনো অনেক কাজ বাকী, মসজিদ নির্মাণ কাজ এগিয়ে নিতে সর্বস্তরের মানুষের সার্বিক সহযোগিতা দরকার, মসজিদের সামনে রাখা দানবাক্সে দান করা যাবে ।
উদ্বোধন হবে কবেঃ
মসজিদটি উদ্বোধনের সময় পবিত্র ক্বাবা শরিফের ইমাম ও বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী উপস্থিত থাকবেন বলে আশা করা হচ্ছে , তাদের দেওয়া সময় অনুযায়ী উদ্বোধনের সময় নির্ধারণ করা হবে ।
২০১ গম্বুজ মসজিদ দেশের একমাত্র যেখানে নিয়মিত সারাদেশের মানুষের জন্য মঙ্গল কামনা ও প্রবাসীদের মঙ্গল কামনা করে দোয়া করা হয় ।
কিভাবে যাবেনঃ
সড়কপথ, রেলপথ , নৌপথ ও আকাশপথে ২০১ গম্বুজ মসজিদে যেতে পারেন । এ সংক্রান্ত নির্দেশনা সহ একটি ভিডিও আছে দেখতে পারেন অথবা গুগল ম্যাপে ২০১ গম্বুজ মসজিদ লিখে সার্চ করুন ।
#মসজিদ
#masjid
5 окт 2024