বাংলা ছন্দ । মুক্ত বা নঞ ছন্দে কবিতা লেখার নিয়ম । সহজপাঠ ১২ | Bengali Free Verse মুক্ত বা নঞ ছন্দে কবিতা লেখার নিয়ম ১২ তম পর্ব গ্রন্থনা ও উপস্থাপনা হাসানআল আব্দুল্লাহ সহায়ক গ্রন্থ কবিতার ছন্দ মাওলা ব্রাদার্স, ঢাকা
স্যার, আমি একটু আধটু লেখালেখি করি। স্বরবৃত্ত,মাত্রাবৃত্ত এবং অক্ষরবৃত্তে বেশ কিছু কবিতা লিখেছি। অক্ষরবৃত্ত তথা সনেটও লিখেছি। তবে মুক্তছন্দে আমার জানার পরিধিটা ক্ষুদ্র ছিল। এখন তা সুবিধামতো হয়েছে। ধন্যবাদ নিরন্তর। পরম করুণাময় আপনাকে ভালো রাখুক।
১/অক্ষরবৃত্তের ক্ষেত্রে সমস্ত বদ্ধস্বরকে ২ মাত্রা দেয়ার বিধান নঞ ছন্দে বাধ্যতামূলক নাকি ঐচ্ছিক? ২/অক্ষরবৃত্ত ছন্দে ইচ্ছা করলেই কি সকল বদ্ধাক্ষরকে ২ মাত্রা দেয়া যায়?
১. ঐচ্ছিক, তবে সেটি শুধু শব্দের শুরু ও মাঝের বদ্ধস্বরগুলির ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। শব্দ শেষের বদ্ধস্বরকে দু'মাত্রা দেয়া বাধ্যতামূলক। ২. যায়। তবে যে নিয়মই অনুসরণ করুন না কেনো পুরো কবিতায়ই তা করতে হবে।
মুক্তছন্দ আর ইংরেজিতে ফ্রি ভার্স এক নয়। তবুও প্রচলন অনুযায়ী আমি "আক্ষরিক" অনুবাদটি রেখেছি। তবে মুক্তছন্দ মিত্রাক্ষর হতে পারে, যেমন আমার "ক্যাফের কবিতা", পুরো বই মুক্তছন্দে লেখা কিন্তু মিত্রাক্ষর। আবার মহাকাব্য "নক্ষত্র ও মানুষের প্রচ্ছদ", মুক্তছন্দের বুনন কিন্তু অমিত্রাক্ষর। ইংরেজি ফ্রি ভার্স প্রতি লাইনে দশ অথবা এগারো স্লেবেল রেখে অমিত্রাক্ষর। এ দুই বিষয়ে আলাদা ভিডিও বানানোর ইচ্ছা থাকলো। ধন্যবাদ।
কবিতা লেখার চিরাচরিত নিয়ম হলো প্রত্যেক লাইনে সমান সংখ্যক পর্ব ও মাত্রা রাখা, যে কবিতা এ নিয়মকে ভেঙে দেয় সেটাই মুক্তক। এটি স্বরবৃত্ত, মাত্রাবৃত্ত ও অক্ষরবৃত্ত সব ছন্দের জন্যেই প্রযোজ্য। সমিল ও অমিল দু'রকম মুক্তক হয়। যেমন নজরুলের 'বিদ্রোহী' সমিল মুক্তক আর শামসুর রাহমানের 'স্বাধীনতা তুমি" অমিল মুক্তক।
@@hassanalabdullah725 অনেক অনেক কৃতজ্ঞতা নিবেদন করছি আমার প্রশ্নের উত্তর দেয়ার জন্য। আরও পরিস্কার হবার জন্য প্রশ্নটা আমি আবারও করছি। প্রশ্নঃ গদ্য ছন্দে কি অক্ষর বৃত্তে অর্থাৎ "ছন্দ" শব্দটিকে দুই মাত্রা হিসেব না করে তিন মাত্রা(মাত্রা বৃত্তের নিয়মে) হিসেব করে লেখা যাবে? কোনো পঙক্তি বা লাইনে মোট বিজোড় মাত্রা রাখা যাবে?
@@aasadkader6876 বাংলা ছন্দের যে নিয়ম, তাতে একমাত্র মাত্রাবৃত্তেই বিজড় মাত্রার পর্ব সম্ভব, পাঁচ ও সাত। স্বরবৃত্তেরও হয়, সেটি সাত মাত্রার মন্দাকান্তা ছন্দ। না "ছন্দ" শব্দটিকে অক্ষরবৃত্তের কেনো নিয়মেই তিনমাত্রা দেয়া যায় না। তবে যদি লেখা যায়, 'ছনদো' এবং যুক্তাক্ষর ব্যাতিত সব বদ্ধস্বরকে দুই মাত্র দেয়া হয় (যে নিয়মে আমি সনেট রচনা করি) হালে সেটা সম্ভব, কিন্তু ওই নানানটি হবে ভুল।
আপাত দৃষ্টিতে এক হলেও রবীন্দ্র পরবর্তী সময়ে প্রায় ১০০ বছর ধরে রচিত নতুন কবিতাগুলোর চরিত্র বদলেছে। তাই 'মুক্তছন্দ' বলাটাই আমি বেশি যুক্তিযুক্ত মনে করেছি। ধন্যবাদ।
আমি অনেক দিন ধরেই কবিতা লিখি, আমার কিছু কবিতা পত্রিকায় ও ছাপা হয়েছে, তবে আমি আমার মত করে সংলাপ ফুটিয়ে তলার চেষ্টা করি, বলতে পারেন এসব নিয়ম জানি ও না আর লেখায় মানি ও না, এখন আমার লেখা গুলো কি ভুল বলে গন্য হবে?
কবিতা: মিছে মায়ার শিকল কলমে : এসএম বাশার ঘুমহীন দুটি চোখ অক্লান্ত জেগে থাকে, মানুষ ঘুমে স্বপ্ন দেখে আর আমাকে স্বপ্নই ঘুমাতে দেয় না। বহু অনুভূতি অজস্র আর্তনাদে রূপ নেয়, চেয়ে দেখি আমি আমার মাঝেই কফিন বন্দি। খুব পরিচিত সে প্রিয় মুখ গুলো দেখা হয় না বহুকাল, সে আদুরে কন্ঠস্বর শুনিনা কত্ত দিন, কেবল কল্পনাতেই অনুভব হয় সে কোমল স্পর্শতা, তাই হৃদয়ে জমা হয়েছে অসীম মেঘের পাহাড়। হাহাকার বুকে মানুষ কতকাল বেঁচে থাকতে পারে জানো কেউ? পথহারা মরুর পথিক যে তৃষ্ণার হাহাকারে ডুবে যায়, যেমন হাহাকারে আকাশ হয় রক্তবর্ণ, আমি সে বিশাল আকাশের মত তেমনি হাহাকার বুকে লালন করি। এ দুর দেশের আকাশে ও জ্বলে, অবাক জ্যোৎস্নার বাতি, মরুর বুকে ও রাতের আকাশ ঝিকিমিকি তাঁরায় হাসে, সাগরের নিবিড় কল্লোলে সুরেরা আচ্ছাদিত হয়, তবে আমি সেসবে উচ্ছাস নয়, বিষণ্ণতা খুজে পাই। শব্দহীন কান্নার আওয়াজ শুধু হৃদয়ে পৌছে যায়, গাল ছুঁয়ে বালিশের স্তুপে নিঃশেষ হয় ঝরা অশ্রু, এ পৃথিবী মায়ার শিকলে হৃদয় বেঁধে রাখে, অথচ বাস্তবতার নিষ্ঠুরতায় মুক্ত হবার আকাঙ্খা কখনো পূরন হয় না।