#ptottashanews #shahjadpur #jamunariver #jamunatv
যমুনার তীব্র ভাঙ্গনে ঘরবাড়ির সাথে ভাঙছে সাজানো গোছানো সুখের সংসার। বুকের চাপা আর্তনাদে পরিবেশ ভারি হয়ে গেছে।
প্রথমে দেখে মনে হতে পারে কোন যুদ্ধ বিধ্বস্ত এলাকায় রয়েছে এসকল মানুষ, যমুনার করাল গ্রাসে এরা বিদ্ধস্তই বটে। কমবেশি সবারই ভিটে আছে তবে ঘর নেই, আবার কারও ঘরবাড়ি কিছুই নেই। রাক্ষুসী যমুনা মুহূর্তেই গ্রাস করে নিয়েছে সাজানো গোছানো সুখের সংসার ও ঘর বাড়ি।
বৈরি আবহাওয়া ও বৃষ্টির মধ্যে অনেকেই পলিথিনের ছাউনীর নিচে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে আশ্রয় খোঁজার চেষ্টা করছেন। এখন পর্যন্ত জরুরি কোন ত্রাণ পৌঁছায়নি অর্ধাহারে অনাহারে থাকা এসকল মানুষের কাছে।
যমুনা নদীতে পানি বাড়ার সাথে সাথেই শাহজাদপুর উপজেলার যমুনা নদীর তীরে শুরু হয়েছে তীব্র নদী ভাঙন। গত কয়েক দিনের ভাঙনে নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে বেশ কিছু বসতভিটাসহ বিস্তীর্ণ ফসলি জমি। ভাঙন আতঙ্কে অন্যত্র সরিয়ে নিচ্ছেন নদী তীরবর্তী ঘর-বাড়ি। গ্রাম ছাড়া হয়েছেন শতশত পরিবার।
যমুনা নদীর তীর রক্ষায় সাড়ে ছয়শ কোটি টাকা ব্যয়ের প্রকল্প চলমান থাকায় সেটা কোন কাজে আসছে না, ভাঙ্গনের জন্য ঠিকাদারের গাফিলতিকে দায়ি করছেন ভুক্তভোগীরা। সরেজমিনে সকাল থেকে বেলা ৩টা পর্যন্ত কোন এই এলাকায় অবস্থান করলেও ভাঙন রোধে কোন জিও ব্যাগ অথবা বস্তা ফেলা হয়নি। ৩টার কিছু পরে একটি নৌযানে করে ৪টি বস্তা ফেলতে দেখা যায়।
এদিকে যমুনায় দ্রুত পানি বৃদ্ধির সঙ্গে শাহজাদপুর উপজেলার কৈজুরী ও জালালপুর ইউনিয়নের পাঁচিল, হাট পাঁচিল, জালালপুর ও সৈয়দপুর গ্রামে রক্তচক্ষু দেখাতে শুরু করেছে যমুনা, শুরু হয়েছে তীব্র ভাঙ্গন। কোন কিছুতেই তার ভাঙ্গন ও তাণ্ডব থামছেই না। কবে যে যমুনার সর্বগ্রাসী ক্ষুধা মিটবে কেউই তা জানে না। রাক্ষসী যমুনার তীব্র ভাঙ্গনে জেলার তিনটি উপজেলার শতশত বসতবাড়ি ও হাজার হাজার বিঘা ফসলি জমি ইতিমধ্যেই নদীগর্ভে বিলিন হয়ে গেছে।
শাহজাদপুর উপজেলার জালালপুর এলাকা জুড়ে দেখা দিয়েছে তীব্র নদী ভাঙ্গন। গত কয়েক দিনে জালালপুরসহ বেশ কিছু জায়গায় হঠাৎ যমুনার ভাঙ্গনে বসতভিটা ঘর-বাড়িসহ ফসলি জমি নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। যমুনার করালগ্রাস থেকে বাচাতে ঘর-বাড়িসহ বিভিন্ন স্থাপনা সরিয়ে নেয়া হচ্ছে। ভাঙ্গনের ঝুকিতে রয়েছে এসকল এলাকার একাধিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, মসজিদ, হাট-বাজার, রাস্তা-ঘাট।
ভাঙ্গন কবলিত বেশকয়েকজন ভুক্তভোগী অভিযোগ করে বলেন, নদীর তীরবর্তী এলাকায় কাজের নির্দিষ্ট সময় পার হয়ে গেলেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কাজ শেষ না করায় দেখা দিয়েছে এই নদী ভাঙ্গন। তাই পানি উন্নয়ন বোর্ড ও ঠিকাদারের গাফিলতিকেই দুষছেন স্থানীয়রা। তাই এখনই জরুরি পদক্ষেপ নেয়ার দাবি ভাঙ্গন কবলিত এলাকাবাসীসহ স্থানীয় জনপ্রতিনিধির।
তারা আরও অভিযোগ করে বলেন, সহায় সম্বল হারিয়ে নারী, শিশু ও বৃদ্ধ সহ শতাধিক মানুষ অনাহারে অর্ধাহারে দিন কাটাচ্ছে। এখন পর্যন্ত সরকারের কোন দপ্তর অথবা কোন জনপ্রতিনিধি কোন ধরণের সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেননি। বর্তমানে ভাঙন কবলিত ভুক্তভোগীরা খোলা আকাশের নিচে পরিবার নিয়ে অবস্থান করছেন।
3 июл 2024