"আরব ভাষা" বলতে আমরা সাধারণত বুঝি আধুনিক মানক আরবি ভাষা, যা আরব দেশগুলিতে সরকারী এবং সাহিত্যিক ভাষা হিসেবে ব্যবহৃত হয়। তবে, আরবি ভাষার মধ্যে বিভিন্ন আঞ্চলিক উপভাষা বা ডায়ালেক্টের বৈচিত্র্য রয়েছে। এর ফলে এক ভাষাগত ঐতিহ্যের মধ্যেই বিভিন্ন রকম ভাষাগত প্রভাব দেখা যায়। আরবি ভাষার মধ্যে নিম্নলিখিত কিছু ভাষাগত বৈশিষ্ট্য এবং প্রভাব পরিলক্ষিত হয়: 1. সেমিটিক ভাষার প্রভাব: আরবি ভাষা সেমিটিক ভাষা পরিবারের অংশ, যার মধ্যে হিব্রু, আরামাইক, এবং আমহারিক ভাষাও অন্তর্ভুক্ত। এ কারণে শব্দ, ধ্বনিতত্ত্ব এবং ব্যাকরণের অনেক দিক সেমিটিক ভাষার সাথে মিল রয়েছে। 2. আঞ্চলিক উপভাষা (Dialects): আরব বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলে বিভিন্ন ধরণের আরবি ভাষার উপভাষা পরিলক্ষিত হয়, যেমন: মিশরীয় আরবি লেভান্টাইন আরবি (লেবানন, সিরিয়া, জর্ডান, এবং ফিলিস্তিন) মাগরেবি আরবি (মরক্কো, আলজেরিয়া, তিউনিসিয়া, লিবিয়া) উপসাগরীয় আরবি (সৌদি আরব, কুয়েত, কাতার, বাহরাইন, ওমান) এই উপভাষাগুলির মধ্যে উচ্চারণ, শব্দভাণ্ডার এবং কিছু ক্ষেত্রে ব্যাকরণের ভিন্নতা রয়েছে। 3. পারসিয়ান ভাষার প্রভাব: ইসলামের বিস্তারের সময় আরবি এবং পারসিয়ান ভাষার মধ্যে পারস্পরিক প্রভাব ছিল। পারসিয়ান ভাষা থেকে আরবি ভাষায় বেশ কিছু শব্দ এসেছে, বিশেষ করে সাহিত্যিক এবং বৈজ্ঞানিক ক্ষেত্রে। 4. তুর্কি ভাষার প্রভাব: তুর্কি সাম্রাজ্যের শাসনামলে আরবি ভাষায় তুর্কি ভাষার কিছু শব্দ প্রবেশ করেছে। বিশেষ করে প্রশাসনিক এবং সামরিক পরিভাষায় এই প্রভাব লক্ষ্য করা যায়। 5. ইউরোপীয় ভাষার প্রভাব: ঔপনিবেশিক যুগ এবং আধুনিক সময়ে আরবি ভাষায় ফরাসি, ইংরেজি, এবং স্প্যানিশ ভাষার প্রভাব দেখা যায়। উদাহরণস্বরূপ, উত্তর আফ্রিকার দেশগুলোতে (যেমন মরক্কো, আলজেরিয়া, তিউনিসিয়া) ফরাসির প্রভাব প্রবল। 6. ইসলামিক প্রভাব: কুরআনের ভাষা হওয়ার কারণে, ফার্সি, উর্দু, এবং অন্যান্য মুসলিম প্রধান দেশগুলোর ভাষাগুলোর উপর আরবি ভাষার প্রভাবও লক্ষণীয়। অনেক আরবি শব্দ ইসলামী ধর্মীয় ও সামাজিক পরিভাষা হিসেবে ব্যবহৃত হয়। আরবি ভাষার এই বৈচিত্র্য এবং বিভিন্ন ভাষার প্রভাব এর ইতিহাস এবং আরব বিশ্বের সাংস্কৃতিক আদান-প্রদানকে প্রতিফলিত করে।
বাংলা সংখ্যায় "লি" বা "ঌ" প্রতীকটি ৯-এর জন্য ব্যবহৃত হতো বলে ধারণা করা হয়, তবে বর্তমানে এই প্রতীকটি বাংলা সংখ্যা পদ্ধতিতে আর ব্যবহৃত হয় না। এর কারণ মূলত ঐতিহাসিক পরিবর্তন এবং ধীরে ধীরে ভাষার সরলীকরণের ফল। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বাংলা সংখ্যা পদ্ধতি আরবি-ভারতীয় সংখ্যা পদ্ধতির সাথে মিলিত হয়েছে, যা বর্তমানে আমরা ব্যবহার করি। "ঌ" ধীরে ধীরে বাংলা অক্ষর এবং সংখ্যা থেকে বাদ পড়ে যায়, কারণ আরবি সংখ্যার (যা আজকে আমরা ব্যবহার করি) সহজলভ্যতা ও গ্রহণযোগ্যতা বৃদ্ধি পায়। বর্তমান বাংলা সংখ্যা পদ্ধতিতে ১ থেকে ৯ পর্যন্ত সংখ্যা আরবি সংখ্যা পদ্ধতির মতোই হয়, এবং ৯-এর জন্য "ঈ" প্রতীকটি ব্যবহার করা হয়। সংক্ষেপে, বাংলা ভাষার সংখ্যা পদ্ধতির সরলীকরণ এবং আরবি সংখ্যার সাথে সামঞ্জস্য রাখার প্রচেষ্টায় "লি" বা "ঌ" বাদ পড়েছে।