আসসালামুআলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহি ওয়াবারাকাতুহ ২০ টি গরুর সম্মানিত দর্শক আজকে মূলত গরুর খাদ্য রেসন তৈরি করলাম।
দানাদার খাদ্যের বিতর আমরা এখানে দিয়েছি ৫০ % ভুট্টার আটা , সরিষার খৈল 40%, গমের ভুসি 30%, রাইস ব্রান ২০%, চালের কুড়া ৩০%, শুটকি মাছের গুড়া 10%, ইত্যাদি। আর ভিটামিন ১০-২০%
#গরুর_খাদ্য
#হাড্ডিসার_গরু
#গরু_মোটাতাজা_খাবার
গরু মোটাতাজাকরণ করতে নিচে গরুর খাদ্য খাওয়ানোর নিয়ম ও ইনজেকশন প্রয়োগের পদ্ধতি তুলে ধরা হলো-
[01]
১৫ তম দিন থেকে প্রথম পর্যায়ে ১ থেকে ১.৫ লিটার পানির মাঝে ২-৩ মুটো গুড় বা চিটাগুড় অর্থাৎ ২০০-২৫০ গ্রাম চিটাগুড় দিয়ে তার মাঝে এক চা চামচ পরিমাণ ইউরিয়া সার দিয়ে গুলিয়ে শুকনা ছোট করে কাটা ৪ কেজি খড়ের সাথে মিশিয়ে খাওয়াতে হবে। এভাবে প্রতি দিন খাওয়াতে হবে। প্রতিদিন দুইবার ইউরিয়া মিশ্রিত খড় বা ইউএমএস খাওয়াতে হবে। এটিই গরুকে ইউরিয়া খাওয়ানোর নিয়ম গুলোর মধ্য উত্তম পদ্ধতি। এই সময় ১৫০-২০০ কেজি ওজনের একটি গরুকে কমপক্ষে ৪ কেজি খড় ও ৫ কেজি ঘাস খাওয়াতে হবে। ঘাসের অভাবে গরুর চাহিদা মতো সকাল ও বিকালে কমপক্ষে ৮ কেজি ইউএমএস খড় খাওয়াতে হবে। এছাড়া উন্নত খাবার ১ কেজি থেকে ধিরে ধিরে বৃদ্ধি করা শুরু করতে হবে। পাতলা পায়খানা দেখা দিলে উন্নত খাবার বা দানাদার খাবারের পরিমাণ কমাতে হবে। ১৫ তম দিনে ”ভিটামিন এডিই ইঞ্জেকশন” ১০ মিলি মাংশে প্রয়োগ করার পর ২০ তম দিনে ক্যাটাফস ইঞ্জেকশন ১০ মিলি প্রয়োগ করতে হবে। ইউরিয়া মিশ্রিত ইউএমএস খাওয়ানোর শুরু থেকে প্রথম ৭ দিন গরুকে নিয়মিত গোসল করাতে হবে এবং ছায়া যুক্ত স্থানে রাখতে হবে।
[02]
২৫ তম দিনে ভিটামিন এডিই ইঞ্জেকশন মাংসে প্রয়োগ করতে হবে এবং ২৫ তম দিন থেকে ১ থেকে ১.৫ লিটার পানির মাঝে ২-৩ মুটো গুড় বা চিটাগুড় দিয়ে তার মাঝে দুই চা চামচ পরিমাণ ইউরিয়া সার দিয়ে গুলিয়ে ৪ কেজি শুকনো ছোট করে কাটা খড়ের সাথে মিশিয়ে বা ৩০ লিটারে বড় বালতির এক বালতি খড় তৈরি করে খাওয়াতে হবে। একি নিয়মে তৈরি করে দিনে দুই বেলা খাওয়াতে হবে। এভাবে ১০ দিন খাওয়াতে হবে। উন্নত খাবার দুই কেজি থেকে ধিরে ধিরে বাড়ানো যেতে পারে। পাতলা পায়খানা দেখা দিলে উন্নত খাবার বা দানাদার খাবার কমাতে হবে। ২৭ তম দিনে ক্যাটাফস ইঞ্জেকশন প্রয়োগ করতে হবে।
[03]
৩৫ তম দিন থেকে ১ থেকে ১.৫ লিটার পানির মাঝে ২-৩ মুটো গুড় বা চিটাগুড় দিয়ে তার মাঝে তিন চা চামচ পরিমাণ ইউরিয়া সার দিয়ে গুলিয়ে শুকনা ছোট করে কাটা ৪ কেজি খড়ের সাথে মিশিয়ে খাওয়াতে হবে। সকাল বিকাল একি ভাবে তৈরি করে মোট ৮ কেজি খড় খাওয়াতে হবে। এভাবে ১০ দিন খাওয়াতে হবে। ৩৫ তম দিনে ভিটামিন এডিই ইঞ্জেকশন প্রয়োগ করতে হবে। ৩৮ তম দিনে ক্যাটাফস ইঞ্জেকশন প্রয়োগ করতে হবে।
[0৪]
৪৫ তম দিন থেকে ১ থেকে ১.৫ লিটার পানির মাঝে ২-৩ মুটো গুড় বা চিটাগুড় দিয়ে তার মাঝে চার চা চামচ পরিমাণ ইউরিয়া সার দিয়ে গুলিয়ে ৪ কেজি শুকনা কাটা পলের সাথে মিশিয়ে খাওয়াতে হবে। এই সময় এই প্রক্রিয়া কৃত খড় সকালে ৪ কেজি ও বিকালে ৪ কেজি খাওয়াতে হবে। এভাবে ৫ দিন খাওয়ানোর পর ধিরে ধিরে ইউরিয়ার পরিমাণ বাড়াতে হবে। দ্রুত এমন পর্যায়ে নিতে হবে যেন চার কেজি শুকনা খড় বা ২০ লিটারের এক বালিতি খড়ে ১ থেকে ১.৫ লিটার পানির মাঝে ২ মুঠ বা ২০০-২৫০ গ্রাম চিটাগুড় মিশিয়ে তার মাঝে ১৫ মিলি সাইজের মুটকির চার মুটকি ইউরিয়া গুলিয়ে খড়ের সাথে মিশিয়ে খাওয়াতে হবে। সকালে চার কেজি খড় ও বিকালে চার কেজি খড় এভাবে প্রক্রিয়া করে গরুকে খাওয়াতে হবে। এভাবে গরু বিক্রি করা না পর্যন্ত ইউরিয়া মিশ্রিত খড় দিনে ২ বার খাওয়াতে হবে, কোন ক্রমেই সকালে ৪ ও বিকালে ৪ মোট ৮ মুটকি বা ১২০ মিলি এর বেশি ইউরিয়া এক দিনে গরুকে খাওয়ানো ঠিক নয়। প্রতি মুটকির মাপ ১৫ মিলি। তাই প্রতি দিনে ইউরিয়া খাওয়ানোর পরিমাণ দাঁড়াবে ১৫ x ৮ = ১২০ মিলি। এর চেয়ে বেশি খাওয়ালে পেটে বদ হজম দেখা দিতে পারে। এই সময় থেকে গরুকে ক্যাটাফস ইঞ্জেকশন কমিয়ে দেওয়া যেতে পারে বা ২০ দিনে ১ টি দেওয়া যেতে পারে। এই সময়ে প্রতিদিন সকালে একটা ও বিকালে একটা এনোরা ট্যাবলেট খাওয়াতে হবে, বিক্রির আগ পর্যন্ত এটা খাওয়াতে হবে। ৫০ তম দিনে ভিটামিন এডিই ইঞ্জেকশন দিতে হবে এবং এই ইঞ্জেকশন বিক্রির আগ পর্যন্ত প্রতি ১০-১৫ দিন অন্তর প্রয়োগ করতে হবে।
[05]
গরুকে পর্যাপ্ত পরিমানে খাবার সরবরাহ করতে হবে। খাবার পাত্রে সবসময় খাবার রাখতে হবে। প্রতি দিন খাবারের সাথে ৬০-১০০ গ্রাম লবন খাওয়াতে হবে। চাউলের কুড়া, ভাতের মাড়, সব্জির খোসা খাওয়াতে হবে। এছাড়া পারলে ৪-৬ কেজি কাচা ঘাস খেতে দিতে হবে। দানাদার খাদ্য একবারে না দিয়ে ভিজিয়ে খড়ের সাথে মাখিয়ে দেওয়া যেতে পারে অথবা সকাল বিকাল ২ বারে ভাগ করে খাওয়াতে হবে। ভিজিয়ে খড়ের সাথে মিশিয়ে খাওয়ালে খড় বেশি করে খাওয়ানো সম্ভব হবে। পর্যাপ্ত পরিমানে বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ করতে হবে। বেশি করে পানি খেলে গরুর পরিপাকে সুবিধা হয়। খেয়াল রাখতে হবে যেন গোবর শক্ত বা খুব ঢিলা না হয়ে যাই। মিডিয়াম নরম রাখার চেষ্টা করতে হবে সব সময়। গোবরে সমস্যা দূর করার জন্য মাঝে মাঝে খাবারের সাথে অল্প পরিমানে খাবার সোডা মিশিয়ে খাওয়াতে হবে যাতে পেটে গ্যাস না জমে। গরুর বাড়তি যত্ম হিসাবে বিভিন্ন ভিটামিক্স জাতীয় গুড়া ভিটামিন ও মিনারেল খাবারের সাথে মিশিয়ে খাওয়ানো যেতে পারে, এতে ফল আরো ভালো হবে। ইউরিয়া হল এক ধরনের আমিষ যা গরুর ঘাসের অভাব অনেকাংশে পূরণ করে থাকে ফলে গরু দ্রুত বৃদ্ধি পেতে থাকে। ইউরিয়া খাওয়ানোর দিন থেকে গরুকে নিয়মিত প্রতিদিন গোসল করাতে হবে। এবং ইউরিয়া খাওয়ানো শুরুর প্রথম সাতদিন ছায়া যুক্ত স্থানে রাখতে হবে। গরুকে কখনো রোদে বাধা চলবে না। তবে সকালের রোদে বাধা যেতে পারে। #গরু_মোটাতাজাকরন
#গরুর_খাবার
5 окт 2024