১০ই মহররমের ঘটনা ধামাচাপা দেয় এজিদের বংশধর। কালান্দার ডা.বাবা জাহাঙ্গীর বা-ঈমান আল সুরেশ্বরী। 

↘️ মহররম মাস (প্রচলিত ভ্রান্ত ধারণা!) ও কারবালা প্রসঙ্গে:
সব ধর্মেই নতুন বছরের প্রথম মাসটিকে খুশীর নতুন মাস বলে মনে করে। অথচ মুসলমানেরা নতুন বছরের প্রথম মাসটিকে বেদনার মাস হিসাবে গণ্য করেন।
কোটি কোটি শিয়া মুসলমানেরা এই মহরম মাসে বিলাপের রক্তাক্ত মাতন করছে বছরের পর বছর ধরে। মহরম মাসে শিয়া মুসলমানেরা বিলাপ করে যত রক্ত ঝরায় আওলাদে রসূলদের এবং বিশেষ করে ইমাম হোসায়েনের জন্য তা এক মহা বিস্ময়কর বিষয়। কারণ দুনিয়ার সব রাজনৈতিক নেতাদের একসংগে করলেও এবং দুনিয়াতে এমন কোন মহাপুরুষ আজও জন্মগ্রহণ করেননি যার জন্য বছরের পর বছর এমন বিলাপ আর এমন রক্ত ঝরানোর করুন দৃশ্য দেখা যায়। বাস্তব সত্য, তা যতই অপছন্দনীয় হোক না কেন এবং এরকম বিলাপের বিরুদ্ধে যত রকম কথাই প্রচার করা হোক না কেন, যারা বিলাপ করে যায় তারা যুগ যুগ ধরে করে গেছে এবং যাবে। উমাইয়া এবং আব্বাসীয় রাজবংশ ধূর্ত শিয়াল পণ্ডিতকেও হার মানিয়ে ছেড়েছে। তারা তাদের বেতনখোর আলেমদের দিয়ে একটি খাসা মিথ্যা হাদিস বানিয়ে সবার চোখে ধুলা দেবার চেষ্টা করেছে এবং এতে বেশ কিছুটা কৃতকার্য হয়েছে। কিন্তু গবেষণার চুল-চেরা বিশ্লেষণে এদের ডাহা মিথ্যা হাদিসটির ভিত্তিই থাকে না। দশই মহরম এর উপর ভিত্তি করে ডাহা মিথ্যা হাদিসটি বানানো হয়েছে
এবং গবেষণার ল্যাবরেটরিতে এসিড টেস্ট করতে গিয়ে কেবল প্রতারণার চমকই পাওয়া যায়। যেমন দশই মহরমের দিনে অনেকগুলো ঘটনা ঘটেছে এর মধ্যে দু'টো ঘটনাই মৃত্যুর । একটি শহীদ অপরটি মৃত্যু। আর যত ঘটনা এই দশই মহরমের দিন ঘটে গেছে সবগুলো ঘটনাই খুশীর ঘটনা। আনন্দ আর উৎসব করার ঘটনা এবং সবচেয়ে বেশী ধাপ্পাবাজীর ঘটনাটি হলো, এই দশই মহরমের দিনে দুই হাজার পাঁচশত নবী জন্মগ্রহণ করেছেন। তিনশত ষাট দিনে একবছর হয় (চন্দ্র মাসের
হিসাবে) এবং নবীর সংখ্যা এক লক্ষ চব্বিশ হাজার কি দুই লক্ষ চব্বিশ হাজার।
এতো দিন থাকতে মাত্র একটি দিন তাও এই দশই মহরমের দিনে দুই হাজার পাঁচশত নবীর জন্ম হয়েছে। সাবাস! এবং বাহবা দিতে হয় দুই রাজবংশকে। খুব ভালো করে লক্ষ্য করুন এবং গবেষণা করুন! দেখতে পাবেন যীশু খৃষ্টের মতো নবীর জন্ম হয়েছে সম্ভবত রজব মাসে। যদি পঁচিশে ডিসেম্বর তারিখটিকে দুই হাজার বছর আগে নিয়ে হিসাব করা হয়। যদিও যীশু খৃষ্টের জন্মের সময় মুসলমানদের হিজরী সালের কোন অস্তিত্বই ছিলো না। তবুও যদি একটা মোটা হিসাব করি তাহলে দশই মহরম তো দূরে থাক এমন কি মহরম মাসটির প্রশ্নই আসে না। কারণ মহরম মাসের অনেক পরে রজব মাস পড়ে আর সে মাসেই যীশু খৃষ্ট জন্মগ্রহণ করেন। ধূর্ত দুই রাজবংশ এই বিষয়টি ভালো করে জানে বলেই খুব বড় বড় নবীরা এই মাসে জন্মগ্রহণ করেননি বলে তাঁদের কারো নাম উল্লেখ করা হয়নি। কেবল নাম না জানা অজ্ঞাত দুই হাজার পাঁচশত নবীর জন্ম হয়েছিলো এই দশই মহরমের বিশেষ দিনে বলে উল্লেখ করা হয়েছে। অবশ্য খুব বড় বড় নবীদের এই দশই মহরমের দিনটিতে নাজাত (বিপদমুক্ত) হবার ঘটনাগুলো সুন্দর বাক্যের গাঁথুনি দিয়ে সাজিয়ে মুসলমানদের পাতে তুলে দেবার সুন্দর ব্যবস্থা করে রেখেছে। তার নমুনাগুলো একটি একটি করে তুলে ধরলে এবং গবেষণার মাধ্যমে বিচার বিশ্লেষণ করতে গেলে পাঠক ভাইদের চোখে সবকিছু ধরা পড়তে শুরু করবে। দশই মহরমের সবগুলো ঘটনার
মিথ্যা বয়ান তুলে না ধরে যদি কিছুটাও তুলে ধরা হয়, তাহলেও পাঠক অবাক হবেন। কিন্তু জালিয়াতির বিষয়টি সবার চোখে ধরা পড়বে না। এমন কি ভালো গবেষকরাও এই বিষয়টি ধরতে না পেরে আব্বাসীয় রাজবংশের বানানো মিথ্যা হাদিসটির সংগে গা ভাসিয়ে দেয়। যেমন দশই মহরমের দিন আল্লাহ লাওহে মাহফুজ এবং সবকিছু সৃষ্টি করেছেন। এই দশই মহরমের দিনে আল্লাহ নদ-নদী তৈরি করেছেন। এই দশই মহরমের দিনে পাহাড় পর্বত, সাগর-মহাসাগর তৈরি করেছেন। ডাইনোসর নামক ভয়ংকর জীবরা যে এই পৃথিবীতে বাস করতো এবং তারা কালের বিবর্তনে ধ্বংস হয়ে গেয়েছিলো সেই বয়ানটি কিন্তু এখানে মোটেও পাবেন না। এনাকোভা নামক বৃহৎ সর্পরাজের উল্লেখ তো কল্পনাই করা যায় না। কারণ আব্বাসীয় রাজবংশের বেতনখোর আলেমেরা ডাইনোসর নামক জীবদের কথা এবং এনাকোভা নামক বৃহৎ সর্শরাজের কথা বিন্দু-বিসর্গও জানতো না। অথচ নদ-নদী পাহাড়-পর্বত, সাগর-মহাসাগর দশই মহরমে আল্লাহ তৈরি করেছেন এই ডাহা মিথ্যা বয়ানটি পাবেন। এই দশই মহরমের দিনে আল্লাহ আদমকে তৈরি করেন (হিসাব রাখার কেউ ছিলো কি তখন?)। এই দশই মহরমের দিন আদমকে বেহেস্তে প্রবেশ করানো হয় (খুশীর কথা)।
আদম এবং হাওয়াকে নিষিদ্ধ বৃদ্ধের স্বাদ গ্রহণ করার
অপরাধে বেহেস্ত থেকে বাহির করে দেওয়া হয়। (বাহির করার দিনটি কিন্তু দশই মহরম বলে ঘোষণা করা হয়নি। কারণ এটা দুঃখজনক ঘটনা বলে।) এবং এই দুনিয়াতে তিনশত বছর (?) কান্নাকাটি করার পর এই দিনে তথা দশই মহরমের দিনে আল্লাহ আদমের তওবা কবুল করেন (কত বড় খুশীর খবর)। তারপর এই দশই
মহরমের দিনে নবী ইদ্রিসকে প্রবেশ করানো হয় বেহেস্তে। (খুশীর খবর)। এই দশই মহরমের দিনে নূহ নবীর নৌকা জুদি পর্বতে ভিড়ে। কারণ নূহ নবীর সময় বন্যায় এতো পানি হয়েছিলো যে দুনিয়ার সব পাহাড়-পর্বত পর্যন্ত পানিতে ডুবে গিয়েছিলো। দুনিয়ার সবচেয়ে উঁচু পর্বত মাউন্ট এভারেষ্ট ডুবে গেল অথচ জুদি পর্বতের চূড়াটি বন্যার পানি নেমে যাবার পর প্রথম দেখা দেয় এবং নৌকাটা ভিড়তে পেরেছিলো। (গবেষণার অংকে মাউন্ট এভারেষ্ট ডুবে আছে আর তার চেয়ে কত নীচু জুদি পর্বত দেখা যাচ্ছে বলার মাঝে হিসাবটা মেলাতেই পারছি না। ) এই মহাপ্লাবন যে প্লাবনে দুনিয়ার সবকিছু ডুবে গিয়েছিলো সেই প্লাবনের পানি সবটুকু সরে গিয়েছিলো প্রচণ্ড হুড়াহুড়ি করে এই দশই মহরমের দিনে। (এর চেয়ে আর আনন্দের এবং বিস্ময়কর সুসংবাদ কি হতে পারে?)।
নবী আয়ুব যিনি ধৈর্য ধারনের অকল্পনীয় নিদর্শন হয়ে
আছেন, সেই আয়ুব নবী আঠারোটি বছর ভীষণ
চলবে.......
সূত্র : সুফিবাদ আত্মপরিচয়ের একমাত্র পথ-১ম খন্ড
ডা.বাবা জাহাঙ্গীর বা-ঈমান আল সুরেশ্বরী।