ভূ-স্বর্গ নামে পরিচিত কাশ্মীর। এর রূপে এমনই মুগ্ধ হয়েছিলেন মোঘল বাদশাহ জাহাঙ্গীরযে কাশ্মীরকে স্বর্গের সাথে তুলনা করেছেন। কাশ্মীরের রূপের কথা নতুন করে বলার কিছু নাই। ঘুরে বেড়াতে পছন্দ করে এমন সবারই মনে সুপ্ত বাসনা থাকে জীবনে একবার হলেও কাশ্মীর ঘুরে আসার। প্রতি বছরই দেশের অনেক ভ্রমণ পিপাসুরা এই স্বর্গরাজ্য কাশ্মীরে ছুটে যায় এর অপার সৌন্দর্যে মুগ্ধ হতে।
কাশ্মীরের দর্শনীয় স্থানঃ
কাশ্মীরের পুরো শহরটাই যেন স্বর্গ রাজ্য, দিগন্ত জোড়া উঁচু উঁচু পাহাড়ের মাঝে দেখা মিলে সাদা বরফের খেলা।রাজ্যের ভিতরে রয়েছে দেখার মতো নানা জায়গা। আর শহরের একটু বাইরে অপেক্ষা করছে আরেক সৌন্দর্য। তারপরও পর্যটকদের সুবিধার জন্য কিছু উল্লেখযোগ্য স্থানের নাম নিচে দেওয়া হলঃ
শ্রীনগর : শ্রীনগরে প্রথমেই চোখে পড়বে পাহাড়ের চূড়ায় বরফের মতো সাদা তুষার কনা। এখানে আছে মোঘল গার্ডেন, টিউলিপ গার্ডেন, হযরত বাল মসজিদ, ডাল লেক ও নাগিন লেক। গাড়ি ভাড়া করে সারাদিনের জন্য শ্রীনগর শহর টা দেখলে ভালো লাগবে। আরডাল লেকের ভাসমান শহরও ভালো লাগার মতো।
গুলমার্গ : শ্রীনগর থেকে মাত্র ৫২ কিলো দূরে সবুজ ঘাসে বিস্তৃত গুলমার্গ, যা সারা বছরই বরফে ঢাকা থাকে। এখানে দেখতে পারবেন গন্ডোলা, গলফ কোর্স, বাবা ঋষির মাজার, আফারওয়াত পিক, সেন্ট ম্যারি চার্চ। ক্যাবল কার ছাড়াও প্যারাগ্লাইডিং এর মজা পাবেন গুলমার্গে।
পেহেলগাম : শ্রীনগর থেকে ৯৭ কিলো দূরে ট্যাক্সি করে যেতে পারবেন পেহেলগামে। জুলাই থেকে অক্টোবরের মাঝে গেলে এখানে দেখা মিলবে রাস্তার দুধারের আপেল বাগান। আছে দেখার মতো অনেক কিছু। একটু সময় নিয়ে ঘুরলে ভালো ভাবে দেখতে পারবেন সবকিছু, যেমনঃ লিদার নদী, বেতাব ভ্যালি, চান্দেরওয়ারি, আরু ভ্যালি, ধাবিয়ান, কাশ্মীর ভ্যালী পয়েন্ট, কানিমার্গ। ঘোড়ায় বসে ঘুরে বেড়াবার মজা পাবেন পেগেলহাম ভিউ পয়েন্টে। এখানের মিনি সুইজারল্যান্ড হিসেবে পরিচিত বাইসারানে যেতে ভুলবেন না।
সোনামার্গ : শ্রীনগর থেকে ৪২ কিলো দূরে সুন্দর উপত্যকা ও ঝর্ণার দেখা মিলবে সোনামার্গে। এখানে আছে থাজিয়ান হিমবাহ। এছাড়াও দেখা মিলবে সিন্ধু নদীর। আছে স্লেজিং, স্নো বাইক ও ঘোড়ায় চড়ার সুযোগ।
এছাড়াও কাশ্মীরে কিছু জায়গা রয়েছে যা শহর থেকে একটু দূরে, হয়তোবা অনেকেরই অজানা, তবে ভালো লাগার মতো। যেমন - মার্তণ্ড মন্দির শ্রীনগর থেকে ৬৪ কিলো দূরে অন্যরকম স্থাপত্যে গড়ে উঠা এক হিন্দু মন্দির। এখানে “হায়দার” ছবির একটা বিখ্যাত গানের শুটিং হয়। ছোট্ট একটি শহর কোকেরনাগ , রয়েছে মাছ ধরার ব্যবস্থা। ছটপলে রয়েছে আছে কাঠ বাদাম ও আপেল বাগানের সমাহার। আরও যেতে পারেন নুব্রা উপাতাক্য ও দুধপতরির মতো জায়গায়।
কখন যাবেন কাশ্মীর
বাংলাদেশের গ্রীষ্মকাল সেই হিসেবে ইংরেজি বছরের এপ্রিল থেকে মে, এই সময়টাকে কাশ্মীরে যাওয়ার জন্য সবচেয়ে ভালো সময় বলা হয়। এই সময় ফুলে ভরা থাকে চারদিক, বিশেষ করে টিউলিপ ফুল।
বাংলাদেশের শরৎকাল সেই হিসেবে সেপ্টেম্বর থেকে অক্টোবরের সময়টাতে বরফ কিছুটা কম থাকে। তবে নানা ধরনের ফল পাওয়া যায় এই সময়ে। বিশেষ করে আপেল আর চীনা বাদামের দেখা মিলবে এই সময়।
আর শীতকাল হিসেবে, ডিসেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি মাসে, কাশ্মীরে চারিদিকে শুধু বরফ আর বরফ,সাথে স্নোফল। আর তাই এই সময় কাশ্মীরে গেলে চারপাশের এক অদ্ভুত সুন্দর দৃশ্য চোখে পড়বে। তবে শীতকালে ভ্রমণের ক্ষেত্রে বাড়তি সাবধানতার প্রয়োজন আছে।
কোথায় থাকবেন
কাশ্মীরে বেশকিছু হোটেল পাবেন থাকার জন্য। ভাড়া পড়বে ১০০০- ১৫০০ রুপির মধ্যে। শ্রীনগর ও জম্বুতেও আছে থাকার জন্য বেশ কিছু হোটেল, রিসোর্ট ও হাউজ বোট। এর মধ্যে হোটেল জামরুদ, হোটেল জাহাঙ্গীর, গ্র্যান্ড হোটেল উল্লেখযোগ্য। রুম হিসেবে ভাড়া ১২০০- ২৫০০ রুপির মধ্যে দুই জনের জন্য।
কোথায় কি খাবেন
কাশ্মীর গিয়ে নানা ধরনের তাজা ফলের স্বাদ নিতে ভুল করবেন না। এছাড়াও কাশ্মীরের মাটন বিরিয়ানি বিখ্যাত। এখানকার ওজওয়ান (নানা ধরনের খাবারের এক প্লেটার), কাশ্মীরি কাবাব, মাটন রোগান জোশ, ভেড়ার মাংস, পনির চামান,আলুর দম, টক বেগুন,নাদরু ইয়াখনি বিখ্যাত। আর রফিক ক্যাফেটেরিয়ার কাবাব আর কুলফির স্বাদও মুখে লেগে থাকার মতো।
কেনাকাটা
কাশ্মীর ভ্রমণ টিপস
ট্র্যাভেল এজেন্সির মাধ্যমে ১-২মাস আগে বিমানের টিকেট কাটলে খরচ কম পড়বে।
শীতকালে কাশ্মীর যাওয়ার ক্ষেত্রে অবশ্যই শীতের প্রস্তুতি নিয়ে যেতে হবে।
কাশ্মীরে ট্রিপে একটু সময় নিয়ে যাওয়া ভালো। সেই ক্ষেত্রে ৫-৬ দিনের সময় নিয়ে গেলে কাশ্মীর ট্রিপটা সার্থক হবে।
কাশ্মীরের টুরিস্ট স্পট গুলোতে ভ্রমণের মজা বাড়ানোর নানা কথা বলে ও প্রলোভন দেখিয়ে টাকা হাতিয়ে নেয় বেশ কিছু চাটুকার লোকজন। তাই নিজে ভালো ভাবে আগে যাচাই করে টাকা খরচ করবেন।
একটা ভালো বুদ্ধি হলো সীমান্ত পার হয়ে কলকাতা গিয়ে তারপর কাশ্মীর যাওয়া, তাতে কলকাতাও দেখা হবে ও খরচও কম হবে। আবার সাথে ফেরার পথে চাইলে লাদাখ ও ঘুরে আসতে পারেন।
অনলাইনে টাকা ও রুপির রেট জেনে টাকা রুপিতে এক্সচেঞ্জ করে নিবেন আগেই।
যেকোনো জিনিস কেনার আগে দামাদামি করবেন কারন কাশ্মীরে সবকিছুর দাম বাইরের পর্যটকদের কাছে একটু বেশি চাওয়া হয়।
কাশ্মীরের খাবারে মশলা বেশি থাকে তাই একটু বুঝে শুনে খাবেন।
এখানে সাধারনত রাত ৮ টার পর সব দোকানপাট বন্ধ হয়ে যায়।
Tags:
shopping haul,pashmina shawls,kashmir tour,kashmiri shawls,kashmir vlog,shopping in srinagar kashmir,kashmir tour plan,kashmir tour bangla,kolkata to kashmir,কাশ্মীর ট্যুর,কাশ্মীর ভ্রমণ গাইড,shopping in kashmir,kashmir,kashmir tourist places,kashmir tourism,kashmir tour packages with price,kashmir tour guide,কাশ্মিরী বিখ্যাত শাল,Best place to buy Kashmiri Shawls,Explore with Pavel,best,shop,কম খরচে কাশ্মীরে কেনাকাটা,Best place for Shopping in Kashmir
Best place for Shopping in Kashmir | কম খরচে কাশ্মীরে কেনাকাটা | Kashmir Tour | Explore With Pavel
9 сен 2022