আমি বাংলাদেশে থাকি।এখনও মনে পড়ে দূরদর্শনের ছুটি ছুটি অনুষ্ঠানে দেখেছিলাম।segment kore kore.কত যে সিনেমা দেখেছি এই ছুটি ছুটি অনুষ্ঠানে। টেনিদা, পদি পিসীর বাক্স, সবুজ দ্বীপের রাজা, ফটিকচাঁদ এ ধরনের মুভি, এই ছুটি ছুটি অনুষ্টানটা আমার কি যে পছন্দ ছিল,বলে বোঝাতে পারবোনা। কাকাবাবু'র যত গল্প যত সিনেমা সব দেখা। ইস্ কি সুন্দর মজার দিন ছিল সেই সব!!
দূরদর্শন e ছুটি ছুটি তে segment wise দেখানো হতো। কত দিন পর আবার দেখলাম। সবাই কত সাবলীল অভিনয় করে গেলেন। দুই ফেলুদা একসাথে, তাও আবার কাকাবাবুর গল্পে। ধন্য বাঙ্গালী ।🙏🏼
আমার মতে সব্যসাচী চক্রবর্তীকেই 'কাকাবাবু' হিসেবে সবচেয়ে ভালো মানায়। কিন্তু সেই সময় কাকাবাবু নিয়ে কোনো সেরকম ফিল্ম সিরিজ হলই না। সব্যসাচী চক্রবর্তী আর দু'বার 'কাকাবাবু' হয়েছেন- 'সন্তু ও একটুকরো চাঁদ' (ফিচার ফিল্ম /টিভি মুভি- কেউ জানা থাকলে পেশ করবেন)এবং 'খালি জাহাজের রহস্য'। ১৯৭৯ সালে প্রণম্য শ্রী তপন সিনহা কাকাবাবু কে প্রথম বড়পর্দায় নিয়ে এলেন,যে গল্পটি তিনি বেছে নিয়েছিলেন সেটি নিঃসন্দেহে কাকাবাবুর অন্যতম সেরা গল্প,যদি না সবসেরা হয়। প্রথমবার দেখবার পরে, মুভিটির কয়েকটি জায়গা আমার ভালো লাগেনি-১) জারোয়াদের দৃশ্যায়ন,যা বাস্তবিক অর্থে ভুল,২) গ্রাফিক্স, উল্কাপাতের গর্তটা বড্ড বালখিল্য লেগেছিল আর তার ভেতরের পাথরটাও বড্ড যেন নিটোল গোল। পরে অবশ্য বারেবারে মুভি টা দেখেছি এবং বর্তমানে মুভিটা সম্পর্কে আমার ধারণা পরিবর্তিত। ওটি নিঃসন্দেহে কাকাবাবুর সর্বসেরা মুভি। 'সবুজ দ্বীপের রাজা'র অত সুন্দর গল্পটাকে ওই সময়ে ,তপন সিনহা খুব সফলভাবেই ফুটিয়ে তুলেছেন।গল্পকে নিজের মত করে পরিবর্তন করে যেটুকু দেখিয়েছেন তা কিন্তু বেখাপ্পা মনে হয়না- সে চিড়িয়াখানার অংশটুকু হোক বা বিদেশী ভিলেনদের জায়গায় বিদেশীদের থেকে contract পাওয়া দেশী ভিলেনের অবতারণার ব্যাপারটাই হোক। বরং,তপনবাবুর নিজের সৃষ্ট 'পাঞ্জা' চরিত্রটা এবং তৎসহ বাকী ভিলেনদের বেশ খানিকটা screen time দিয়ে ওদের character development টা খুব ভালোই দেখিয়েছেন,যেটা গল্পে একেবারেই নেই। দ্বিতীয়ত, 'দাশগুপ্ত' চরিত্রটাকে মূল গল্পের থেকে অনেকটা চেঞ্জ করে দেওয়া- শুধু দৈহিক উচ্চতার পরিবর্তনটাই নয়, তাঁকে কাকাবাবুর শুরুতে এড়িয়ে চলার মূল থিমটা অটুট রেখেও তিনি চরিত্রটিকে অনেকটা 'কোয়ালিটি' দিয়েছেন-তাঁর 'গাইডসত্ত্বা' টা কে সুচারুভাবে ফুটিয়েছেন, তাঁকে দিয়ে দেশাত্মবোধক গানে গলা মিলিয়েছেন।শ্রদ্ধেয় শ্রী অরুণ মুখার্জির মুন্সিয়ানাও এক্ষেত্রে সমান উল্লেখ্য। এখনো পর্যন্ত কিন্তু সেরা সন্তু ওই মুভিতেই আমরা পেয়েছি।বুদ্ধিমান,innocent,কৌতুহলী এবং সাহসী কিশোর সন্তুর একদম perfect দৃশ্যায়ন।(এর পরে দ্বিতীয় কে তা নিয়ে বিতর্ক চলুক,তবে আমার মতে সোহমও আরিয়ান এর থেকে better ছিল)। তৎকালীন technological সীমাবদ্ধতার জন্যে গ্রাফিক্স এর যে ঘাটতি,তা তপনবাবু পুষিয়ে নিয়েছিলেন, আউটডোর শুটিং এর সিনেমাটোগ্রাফি, দক্ষ script আর কোয়ালিটি পরিচালনা দিয়ে।যে দুটো ব্যক্তিগত খুঁতখুঁতুনির কথা আমি ওপরে জানিয়েছি,তা সম্পর্কে এখন বরং অন্যভাবে বলা যায়- ন্যায্য কারণেই ছবিটার ওই দুটো দুর্বল(?) দিক- প্রথমত সেযুগের limited technology, আর দ্বিতীয়ত, censor এর কাঁচি,কারণ 'U' আর বিশেষ করে শিশু-কিশোরদের জন্য তৈরি মুভিতে তো আর সম্পূর্ণ নগ্নতা দেখানো যায় না(কিংবা ধরে নিতে পারি ৫০ বছরে শ্রী গুণদা তালুকদার জারোয়াদের শুধুমাত্র নগ্নতা বিসর্জনের পাঠটুকু দিয়েছেন বা তাঁকে দেখে ওরাও কাপড় পড়তে শিখেছে)। যদি কোনোদিন রিমেক হয় তবে হয়তো অধুনা ট্রেণ্ড অনুযায়ী আরো ড্রামাটিক করে হবে ওই গল্পের মূহুর্তগুলো,তবে রিমেকটিকে কিন্তু পাল্লা দিতে হবে মহীরুহের সঙ্গে।আর স্বয়ং সুনীলবাবুও মুগ্ধ ছিলেন তপনবাবুর কাজে,কারণ কাকাবাবুর কোনো এক গল্পে এই মুভির কথা উল্লেখ করে সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় tribute দিয়েছেন তপন সিনহাকে। পাশাপাশি রাখি পিনাকী চৌধুরীর 'কাকাবাবু হেরে গেলেন' মুভিটাকে। দুটো কারণে সব্যসাচী চক্রবর্তী এই চরিত্রে আমার প্রথম পছন্দ-১) ওনার appearance আর gesture, ২) উনি বাস্তবজীবনে একজন 'wildlife photographer', কাজেই অ্যাডভেঞ্চার ব্যাপারটা ওনার সঙ্গে বেশ খাপ খায়।অভিনয়ে সমানে টক্কর চলেছে দুইজনের মধ্যে- দিকপাল সৌমিত্রবাবু আর সব্যসাচীবাবু। সন্তু হিসেবে অর্ঘ্য চক্রবর্তী চলনসই,তবে মাঝেমাঝেই কেমন গোবেচারা,ব্যোমকে যাওয়া টাইপ লেগেছে,যেটা ঠিক সন্তুর সঙ্গে খাপ খায় না। মুভিটার সাসপেন্সফুল পরিবেশ আর ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক যথেষ্ট প্রশংসনীয়। সব মিলিয়ে মুভিটা ছিমছাম,মেদবর্জিত,যথাযথ তবু কয়েকটা বিষয়ে আরো একটু যত্নবান হওয়া যেত। ১) গোয়ার দৃশ্যে কথোপকথন হিন্দী বা ইংলিশে হলে ভালো হত। আর ফাদার এর চরিত্রে কোনো বয়স্ক লোক থাকলে ভাল হত। ২) ছোটোখাটো সাপোর্টিভ চরিত্রগুলোর অভিনয় আর একটু সাবলীল হওয়া যেত। ৩) জুতোর দোকানের পরিবেশটাও ঠিক দাঁড়ায়নি।৯০ দশকের যে কোনো বড় প্রথম সারির জুতোর দোকানের (যেখানে ফিল্মস্টাররা শপিং করে)কথা স্মরণ করুন। আর, আধুনিক দুটি কাকাবাবু নানা কারণে বড্ড অতিপক্কতার নিদর্শন রেখেছে।ওগুলোকে কাকাবাবুর মুভি মানতে কষ্ট হচ্ছে।
Cinema ta dekhechilam sei school life tokhon Sunday most pbly 4 pm theke cinema hoto khub bhlo legechilo aj snek bochor por dekhlam darun laglo sabyasachi sir r fan ami r soumitra sir ki uni to legend
খুব ভালো মুভি...তবে কিছু কিছু জায়গা আরো ভালো করার উপায় ছিল। যেমন চুনির মালাটার ওপর একটু বেশি ফোকাস করা, যেমনটা বইতে করা হয়েছিল। তারপর সন্তুর ফলো করার সিনটা আরো একটু বেশি রহস্যময় করলে ভালো লাগতো। যাই হোক, ভালোই মুভি টা।
