Jenphar Bangladesh Ltd. নিব���দিত মেডীলাইভের ২১১২ তম পর্বের বিষয় "হেপাটাইটিস রোগ থেকে মুক্তির উপায়", সাথে থাকছেন লিভার গ্যাস্ট্রো-এন্টেরোলজি ও মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডাঃ এম. সাঈদুল হক, সহকারী অধ্যাপক, লিভার বিভাগ, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, চিফ কনসালট্যান্ট, ঢাকা গ্যাস্ট্রো-লিভার সেন্টার // মিডিয়া পার্টনার - MediTalk Digital
কোন হেপাটাইটিস কীভাবে বুঝবেন, লক্ষণ ও চিকিৎসা কী?
২৮ জুলাই ২০২২
হেপাটাইটিস একটি ভাইরাসজনিত রোগ। এটি মূলত লিভারের সংক্রমণ ও প্রদাহ।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার হিসেবে, ২০১৯ সালে হেপাটাইটিসের মারাত্মক সংক্রমণ, সিরোসিস এবং লিভার ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে বিশ্ব জুড়ে ১১ লাখ মানুষের মৃত্যু হয়েছে।
সংস্থাটির হিসেবে দেখা যায়, বাংলাদেশে হেপাটাইটিস বি ও সি ভাইরাসে প্রায় এক কোটি মানুষ আক্রান্ত। বেসরকারি হিসেবে হেপাটাইটিসে প্রতি বছর ২২ হাজারের বেশি মানুষের মৃত্যু হয় বাংলাদেশে।
হেপাটাইটিস সি ভাইরাস শনাক্ত এবং নিরাময় কৌশল আবিষ্কারের জন্য এই বছর চিকিৎসা শাস্ত্রে নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন তিন বিজ্ঞানী যুক্তরাষ্ট্রের হার্ভি জে অল্টার ও চার্লস এম রাইস এবং ব্রিটিশ বিজ্ঞানী মাইকেল হগটন।
পৃথিবীতে বর্তমানে সাত কোটি ১০ লাখের বেশি হেপাটাইটিস সি রোগী রয়েছে বলে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ধারণা করছে।
স্বাস্থ্য সংস্থার ধারণা অনুযায়ী, ২০১৬ সালে এই রোগে আক্রান্ত হয়ে বিশ্বে প্রায় চার লাখ মানুষের মৃত্যু হয়েছিল।
ঠিক সময়ে শনাক্ত এবং চিকিৎসা না হলে লিভার সিরোসিস এবং ক্যান্সার হতে পারে।
ভাইরাল হেপাটাইটিস বিশ্বজুড়ে একটি বড় সমস্যা। প্রতিবছর অসংখ্য মানুষ এ রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যায়। অথচ সবাই সচেতন হলে একে রুখে দেওয়া সম্ভব। ভাইরাল হেপাটাইটিসের কারণ হিসেবে হেপাটাইটিস এ, বি, সি, ডি এবং ই ভাইরাস আমাদের কাছে পরিচিত। এর বাইরেও আরও কিছু ভাইরাস আছে, যেগুলো হেপাটাইটিস বা যকৃতে প্রদাহ ঘটাতে পারে।
হেপাটাইটিস এ: এ ভাইরাসের মাধ্যমে সাধারণত শিশু-কিশোরেরা আক্রান্ত হয়। এটি পানি ও খাবারবাহিত। বেশির ভাগ সময় এর উপসর্গ মৃদু হয়। যেমন অরুচি, বমি, চোখ বা প্রস্রাব হলুদ হওয়া ইত্যাদি। অধিকাংশ ক্ষেত্রে এ ভাইরাসজনিত হেপাটাইটিস এক-দুই মাসের মধ্যে সম্পূর্ণ নিরাময় হয়ে যায়। তেমন কোনো চিকিৎসার প্রয়োজন হয় না। হেপাটাইটিস এ প্রতিরোধের জন্য টিকা আছে।
হেপাটাইটিস বি: এটি সাধারণত রক্তের মাধ্যমে ছড়ায়। এ ছাড়া একই সিরিঞ্জ অনেকে ব্যবহার করলে বা অনিরাপদ যৌনমিলনের ফলে ছড়াতে পারে। এর স্বল্পমেয়াদি ও দীর্ঘমেয়াদি-দুই রকম সংক্রমণ হতে পারে। দীর্ঘমেয়াদি সংক্রমণ থেকে লিভার সিরোসিস ও লিভার ক্যানসার হতে পারে। হেপাটাইটিস বি-এর কার্যকর টিকা আছে।
হেপাটাইটিস সি: এটিও রক্তবাহিত। অনিরাপদ রক্ত পরিসঞ্চালন মূলত এ রোগের কারণ। এর ফলে সাধারণত দীর্ঘমেয়াদি ইনফেকশন বা সংক্রমণ হয়। তবে মাঝেমধ্যে স্বল্পমেয়াদি ইনফেকশনও দেখা যায়। এ রোগের কার্যকর চিকিৎসা আছে। এ ভাইরাসের দীর্ঘমেয়াদি ইনফেকশনের ফলে লিভার সিরোসিস ও লিভার ক্যানসার হতে পারে। এ ভাইরাস প্রতিরোধে কোনো কার্যকর টিকা নেই।
হেপাটাইটিস ডি: এটি সাধারণত হেপাটাইটিস বি ভাইরাসের সঙ্গে হয়ে থাকে। এর ফলে দীর্ঘমেয়াদি ইনফেকশন হলে মারাত্মক জটিলতা দেখা দিতে পারে। যেমন লিভার সিরোসিস ও লিভার ক্যানসার। এ ভাইরাসের কোনো টিকা এখনো নেই।
হেপাটাইটিস ই: এ ভাইরাস পানি ও খাদ্যবাহিত। সাধারণত স্বল্পমেয়াদি ইনফেকশন হয়। উচ্চমাত্রার জন্ডিস হয়। হাসপাতালে ভর্তি হয়ে রোগীর চিকিৎসা নেওয়ার দরকার হতে পারে। গর্ভকালীন আক্রান্ত হলে মারাত্মক জটিলতা দেখা দিতে পারে। সে ক্ষেত্রে অবশ্যই দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
যা করতে হবে
● যেকোনো পরিস্থিতিতে বিশুদ্ধ পানি খেতে হবে। পানি ফুটিয়ে খাওয়া সবচেয়ে নিরাপদ।
● যেখানে সেখানে খাবার খাওয়া যাবে না।
● মাদকমুক্ত থাকতে হবে।
● অবশ্যই নিরাপদ রক্ত নিতে হবে।
● অনিরাপদ যৌনমিলন এড়িয়ে চলতে হবে।
● যেসব ভাইরাস প্রতিরোধে টিকা আছে, সেগুলো নিয়ে নিতে হবে।
● জন্ডিস হলে দ্রুত বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
1 янв 2023