নাটক : কুয়াশার ভেতর একটি মৃত্যু পরিচালনা : পারভেজ আমিন আমার প্রাণের মানুষ আছে প্রাণে তাই হেরি তায় সকল খানে।। আছে সে নয়ন তারায় আলোকধারায়। তাই না হারায়----- ওগো তাই দেখি তায় যেথায় সেথায় তাকাই আমি যেদিক- পানে।। এক সময় খুবই সাধারণ চিত্রশিল্পী সিজার,জীবনের বহমান স্রোতে শুধু হারানোর ভয়ঙ্কর খেলার অজান্তে অংশিদার হওয়ায় সব সুন্দরের মধ্যেই সে শুধু যন্ত্রণা, কষ্ট আর বেদনাই অনুভব করতো। ছোটো বেলার ভালোবাসা শ্রেয়া তাকে ছেড়ে চলে যাবার পর সে হারায় তার বাবা- মাকে।অবশেষে তার প্রাণের চেয়ে প্রিয় স্ত্রীকে ও তাকে হারাতে হয় যা সে বহু বছর বিশ্বাস করতেই চায় নি। তবে বিধাতা পুরুষের সর্বক্ষণ চলে দেওয়া- নেওয়ার খেলা। পাহাড়ে ঘুরতে এসে পুরোনো ভালোবাসারা মুখোমুখি হয় আরেক বার ,সিজার আর শ্রেয়া। আসতে ,আসতে অভিমান, ভুল বোঝাবুঝির মেঘ কাটতে থাকে। শ্রেয়া ফিরিয়ে আনে সিজারকে বাস্তবে। সিজার উপলব্ধি করে পুরোনো ভালোবাসা একই ভাবে বন্দি ছিল তার হৃদয়ের মণিকোঠায়, অমলিন, স্নিগ্ধ,স্বচ্ছ। ভালোবাসার মিলন ঘটে ভালোবাসার সাথে। সিজারের ভূমিকায় সজল - শিল্পী স্বত্তার অভিব্যক্তি তাঁর চোখের অভিনয়ে,স্ত্রীর প্রতি তাঁর গভীর আবেগ সজলের প্রতি অনুভূতিপূর্ণ অভিনয়ে স্পষ্ট। শ্রেয়ার প্রতি সিজারের চিরকালীন ভালোবাসা তাঁর প্রতি অভিব্যক্তি, অভিনয়, আবেগ, আবেশ ও চোখের প্রতি অশ্রুবিন্দুর মধ্যে দিয়ে স্পষ্ট, দৃপ্ত। সুদেষ্ণা শূর, কলকাতা, পশ্চিমবঙ্গ।
মনের আরশিতে পড়েছে এ কার রূপের ছায়া ? কোমল জোছনা যেমন ঢাকে রাত্রির শান্ত কায়া .... হারিয়ে যাওয়া অতীতের সুখ জুড়ালো নয়ন ভরালে বুক প্রেমের পটে রইলো আঁকা সিশান শ্রেয়ার হাসিমাখা মুখ পারভেজ আমিন পরিচারিত উপরুক্ত এই সুন্দর নাটকটি অনেকটা AN ABSTRACT PSHYCHOLOGICAL LOVE STORY বলা যায় ....চিত্র শিল্পী সিশান এবং শ্রেয়ার সম্পর্কে বিচ্ছেদ ঘটে যায় .....দুর্ভাগ্যবশত এই বিচ্ছেদের পর উভয়ের কেউ সুখ খুঁজে পায় না ....শ্রেয়ার আংশিক প্রতিবন্ধী কন্যা তার জীবনের বেঁচে থাকার একমাত্র উপলক্ষ হয়ে দাঁড়ায় .... অপরদিকে সিশান তার মৃতা স্ত্রী প্রিয়ন্তির অলীক উপস্থিতিকে কেন্দ্র করে সুখস্মৃতির ক্যানভাসে একের পর এক কাল্পনিক রঙের কোলাজ রচনা করে ....যে কোলাজে শুধুমাত্র প্রিয়ন্তি নানান বর্ণচ্ছটায় উজ্জ্বল হয়ে সিশানের অন্তরে বেঁচে থাকে ...অবশেষে শ্রেয়া এবং সিশানের জীবনে অতল নিসঃঙ্গতা পূর্ণতা পায় পুনরায় তাদের এক হয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্তকে কেন্দ্র করে ....নাটকে তিন্নি এবং সজল খুব দৃপ্ততার সাথে নিজ নিজ চরিত্রটিকে সার্থক রূপদান দিয়েছে ....এক কথায় সেটি অপুর্ব....সিশানের একাকিত্ব , প্রিয়ন্তির সাথে কাটানো তার সুন্দর মুহূর্তগুলো সজলের অনুভূতিতে লালিত হয়ে অন্তরকে আবেগতাড়িত করেছে ...নেপথ্যে অনুরণিত সারেঙ্গির সুরে মিশে গেছে শ্রেয়া এবং সিশানের জীবন কাব্য ......আহা এমন সুন্দর নাটক যেন বার বার রচিত হয় .....শুভেচ্ছা, শুভকামনা ....শুভদীপ....কলকাতা...... পুনশ্চ: নাটকটির সৌন্দর্য কিছু জায়গায় শব্দবিহীন হওয়ায় কিছুটা হ্ৰাস পেয়েছে ....সবিনয় নিবেদন শব্দগ্রহনের সময় মনোসংযোগ একান্ত প্রয়োজন নয়তো স্রষ্টার সৃষ্টি অসম্পূর্ণ রয়ে যায় .....
